আইন ও অপরাধ

‘পানামা পেপার্সে আমাদের নাম নেই, জাস্ট হ্যারাসমেন্ট’

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রাজা বলেছেন, ‘পানামা পেপার্সে আমাদের কোনো নাম নেই। এসব আমরা চেক করে দেখেছি। আপনারাও ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখতে পারেন। এটা জাস্ট হ্যারাসমেন্ট।’ সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক এস এম এম আখতার হামিদ ভূঁঞার নেতৃত্বে একটি টিম সকাল সোয়া ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত হাসান মাহমুদ রাজাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। হাসান মাহমুদ বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কোম্পানির বিষয়েও জিজ্ঞাসা করেছে। পানামা পেপার্সে আমাদের কোনো নাম নেই। এসব আমরা চেক করে দেখেছি। এটা একটি পত্রিকা লিখেছিল যে, আমাদের নাকি নাম আছে। ২০১৬ সালে পানামা পেপার্স প্রকাশ পেয়েছিল। আমাদের তো এখন ডাকার কথা না।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পানামা ও প্যারাডাইস পেপার্সে যাদের নাম এসেছিল তাদের ডাকা হয়েছিল। তখন আমাদের ডাকে নাই। আমাদের কমপিটিটর উদ্দেশ্যমূলকভাবে একটি পত্রিকার মাধ্যমে আমাদের নাম প্রকাশ করেছে। আপনারাও ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখতে পারেন। আমাকে জিজ্ঞেস করার কিছু নেই। এটা জাস্ট হ্যারাসমেন্ট। আমাদের আয়করের সকল নথি-পত্র জমা দিতে বলেছে। এ বিষয়ে দুদকের সচিব ড. মো শামসুল আরেফিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলতে অস্বীকার করেন। পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারির ঘটনায় অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান ছাড়াও ইউনাইটেড গ্রুপের প্রতিষ্ঠান মাল্টি ট্রেড মার্কেটিং লিমিডেটের পরিচালক খন্দকার মঈনুল আহসান, আহমেদ ইসমাইল হোসেন এবং আকতার মাহমুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক। গত ৮ জুলাই পৃথক পৃথক চিঠিতে তাদেরকে দুদকে হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে অনুরোধ করা হয় বলে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য রাইজিংবিডিকে জানিয়েছেন। ওয়াশিংটনভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে) সম্প্রতি `পানামা পেপার্স` নামে নথি প্রকাশ করে। যেখানে ১ কোটি ১০ লাখ নথি ফাঁস করা হয়। ওই তালিকায় বিশ্বের প্রভাবশালী কয়েকজন রাষ্ট্রপ্রধানসহ শতাধিক ক্ষমতাধর ব্যক্তি ও তাদের আত্মীয়-স্বজনের নাম রয়েছে। তারা কর ফাঁকি দিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বলে অভিযোগ তোলা হয়। যা বিশ্বের বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। জার্মান দৈনিক জিটডয়েচ সাইতংয়ের অনুসন্ধানী সাংবাদিক বাস্তিয়ান ওবারমেয়ারের হাতে এসব নথি আসে। তিনি এগুলো তুলে দেন আন্তর্জাতিক অনুসন্ধানী সাংবাদিক সংস্থা আইসিআইজের কাছে। পরবর্তীকালে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৭৮ দেশের ১০৭টি সংবাদমাধ্যম এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করে তা প্রকাশ করে। কর ফাঁকি ও অর্থপাচার সংক্রান্ত সাড়া জাগানো পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারিতে এ পর্যন্ত রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীসহ ৩৪ বাংলাদেশি ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে এসেছে ফাঁস হওয়া তথ্যে। অভিযোগ অনুসন্ধানে ২০১৬ সালের এপ্রিলে দুদকের উপ-পরিচালক এস এম এম আখতার হামিদ ভূঁঞাকে প্রধান করে তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিম গঠন করে দুদক। অনুসন্ধান টিমের অন্য সদস্যরা হলেন- দুদকের সহকারী পরিচালক মজিবুর রহমান ও উপ-সহকারী পরিচালক রাফী মো. নাজমুস সাদাত। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে বেশকিছু ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক।

       

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ জুলাই ২০১৮/এম এ রহমান/রফিক