আইন ও অপরাধ

‘অসুস্থ মানুষকে মেরে আমার লাভ কি?’

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘উনি অসুস্থ মানুষ, কাশতে কাশতে মরে যান। ওনাকে মেরে আমার লাভ কি? অসুস্থ মানুষকে মেরে আমার লাভ কি?’ রোববার সাভারের আশুলিয়ার চলন্ত বাস থেকে বাবাকে ফেলে দিয়ে মেয়ে জরিনা খাতুন হত্যা মামলার শুনানিতে আদালতের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন মামলার বাদি ও মেয়ের জামাই নুর ইসলাম। মামলাটিতে এদিন নুর ইসলাম ও তার মা মোছা. আমেনা বেগমকে আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর ইন্সপেক্টর মো. শাহজাহান। তবে এদিন নুর ইসলাম ও তার মা আমেনা বেগমের পক্ষে কোন আইনজীবী ছিলেন না। এ সময় আদালত তাদের প্রশ্ন করেন, জরিনাকে আপনারা মেরে ফেললেন? নুর ইসলাম বলেন, আমরা এ বিষয়ে কোনো কিছু জানি না। তখন বিচারক জানতে চান তাহলে কে জানে? তখন নুর ইসলাম বলেন, আমার মামা এ বিষয়ে ভাল জানেন। এরপর আদালতের উদ্দেশ্যে নুর ইসলাম বলেন, উনি (জরিনা খাতুন) আমার শাশুড়ি। তাছাড়া উনি অসুস্থ মানুষ, কাশতে কাশতে মরে যান। ওনাকে মেরে আমার লাভ কি? অসুস্থ মানুষকে মেরে আমার লাভ কি? এরপর আদালত তাদের দুইজনের দুইদিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন।   এদিকে এদিন জরিনার বেয়াই স্বপন একই আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন গত শুক্রবার তিন জনকে গ্রেপ্তার করে। প্রসঙ্গত, সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালী থানার খাসকাওলী গ্রামের মৃত মহির উদ্দিনের স্ত্রী জরিনা খাতুন তার বাবা আলী মন্ডলকে সাথে গত ৯ নভেম্বর দুপুরে আশুলিয়া থানার গাজীরচট মুন্সীপাড়া এলাকায় মেয়ের জামাই নুর ইসলামের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। দুপুরের খাবার খেয়ে বিকেলে নিজ বাড়ি সিরাজগঞ্জের উদ্দেশ্যে বের হন এবং টাঙ্গাইলগামী একটি মিনিবাসে উঠেন। কিছুক্ষণ পর বাসে থাকা হেলপার ও আরো কয়েকজন লোক মারধর করে জরিনার বাবাকে আশুলিয়া মরাগাং এলাকায় নামিয়ে দেয়। জরিনাকে বাসে নিয়ে চলে যায়। জরিনার বাবা বিষয়টি তার আত্মীয় স্বজনকে জানায়। সংবাদ পাওয়ার পর জরিনার মেয়ের জামাই নুর ইসলাম জরিনার আত্মীয়-স্বজন এসে আশুলিয়া ব্রিজের উত্তর পাশে মরাগাং এলাকায় জরিনার মৃতদেহ খুঁজে পায়। এ ঘটনায় নুর ইসলাম বাদি হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পড়ুন : রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ নভেম্বর ২০১৮/মামুন খান/সাইফ