আইন ও অপরাধ

গুলশানে জঙ্গি হামলা : ৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

নিজস্ব প্রতিবেদক : গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আরো চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল। সাক্ষীরা হলেন- তরুন গোমেজ, মো. হোসেন, মো. লেলিন মোল্লা ও সঞ্জয় বড়ুয়া। চারজনই হলি আর্টিজনের কর্মচারী ছিলেন। বুধবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান ওই সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। ট্রাইব্যুনাল আগামী ২৩ জানুয়ারি পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করেছেন। সাক্ষীদের মধ্যে ট্রাইব্যুনাল প্রথম তিনজনের শুধু নাম ঠিকানা লেখার পর রাষ্ট্রপক্ষ তাদের টেন্ডার ঘোষণা করেন। পরে সাক্ষী সঞ্জয় বড়ুয়া আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেন এবং আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন। জবানবন্দিতে সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, ঘটনার রাতে ২০১৬ সালের ১ জুলাই তিনি ইলেকেট্রিশিয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গোলাগুলি শুরু হলে তিনি একটি রুমে আশ্রয় নেন। সেখানে সারা রাত অন্যান্যদের সঙ্গে অবস্থান করেন। পরদিন সকাল ১০টার দিকে রুম থেকে বেড়িয়ে বাসায় চলে যান। পরে ৫ জুলাই ডিবি পুলিশ তাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায় এবং সেখান থেকে তার মোবাইল ফোন জব্দ করেন। এ নিয়ে মামলাটিতে ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হলো। মামলাটিতে গত ২৬ নভেম্বর আট আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। আসামিরা হলেন- হামলার মূল সমন্বয়ক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফে র‌্যাশ, ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ। আসামিদের মধ্যে প্রথম ৬ জন কারাগারে আছেন। অপর দুই আসামি পলাতক রয়েছেন। এদিন কারাগারে থাকা ৬ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলাটিতে গত ৮ আগস্ট আট আসামির বিরুদ্ধে দাখিল করা চার্জশিট গ্রহণ করে আদালত। চার্জশিটে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজা করিমের বিরুদ্ধে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর আগে গত ২৩ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম বিভাগের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির মামলাটিতে চার্জশিট দাখিল করেন। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাত পৌনে ৯টার দিকে কূটনৈতিক এলাকা গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা হামলা করে এবং দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করে। এ সময় অভিযান চালাতে গিয়ে জঙ্গিদের গ্রেনেড হামলায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালাউদ্দিন খান নিহত হন। রাতের বিভিন্ন সময় তিন বাংলাদেশিসহ ২০ জন জিম্মিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে জঙ্গিরা। পরদিন সকালে যৌথ বাহিনী কমান্ডো অভিযান চালায়। এতে ছয় হামলাকারী নিহত হয়। জীবিত উদ্ধার করা হয় ১৩ জিম্মিকে। একই বছরের ৪ জুলাই নিহত ৫ জঙ্গিসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে গুলশান থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ জানুয়ারি ২০১৯/মামুন খান/ইভা