আইন ও অপরাধ

পাঁচ জঙ্গির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনাকারী সন্দেহে আটক নব্য জেএমবির ‘উলফ প্যাক’ এর পাঁচ জঙ্গি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

দুই দফায় ৯ দিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার মোহাম্মদ শিবলী শাহাজাদ ওরফে সাদী ও আশরাফুল আল আমীন ওরফে তারেককে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির। আসামিরা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরী আসামি সাদীর এবং আরেক মহানগর হাকিম সারাফুজ্জামান আনছারী তারেকের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

এর আগে গত ১৮ আগস্ট রিমান্ড চলাকালে শাহ এম আসাদুল্লাহ মর্তুজা কবীর ওরফে আবাবিল, মাসরিক আহমেদ ও এস এম তাসনিম রিফাত আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে তারা কারাগারে আছে।

রাজধানীর ভাটারা থানার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে গত ৮ আগস্ট গ্রেপ্তার করা হয় ওই পাঁচ জঙ্গিকে। পরদিন রাজধানীর ভাটারা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় ৫ দিন এবং ১৫ আগস্ট চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

আসামিদের মধ্যে শিবলী ও আবাবিল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর শিক্ষার্থী। মাসরিক যশোর এম এম কলেজ থেকে বিবিএ শেষ করেছে। তারেক ও রিফাত এসএসসি পাস। শিবলীর বাড়ি কুমিল্লায়, আবাবিলের বাড়ি বরিশালে, মাসরিকের বাড়ি যশোরে, তারেকের বাড়ি টাঙ্গাইলে এবং রিফাতের বাড়ি খুলনায়।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা দেশ ও বিদেশের কিছু সন্ত্রাসী সংগঠনের অনলাইন প্রচারণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে শলা-পরামর্শ করার জন্য বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একত্রিত হয়েছিল। এরা প্রত্যেকেই এনক্রিপটেড অ্যাপ সিক্রেট চ্যাটের মাধ্যমে যোগাযোগ করত। কিন্তু গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে জঙ্গিদের পুরো পরিকল্পনাকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা। পুলিশের বিভিন্ন অভিযানে বেশি সংখ্যক জঙ্গিরা গ্রেপ্তার বা নিহত হয়েছে। এজন্য তারা পুলিশকে টার্গেট করেছিল।

তাদের কাছ থেকে এমন কিছু বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে, যেগুলোর সঙ্গে সম্প্রতি খামারবাড়ি ও পল্টন এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া আইইডির সাথে মিল রয়েছে বলে পুলিশ জানায়।

এর আগে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, জঙ্গিবাদে কেউ একাকী উদ্বুদ্ধ হলে তাকে ‘লোন উলফ’ বলে। আর এই সংখ্যা যখন এক থেকে পাঁচজন বা তারও অধিক হয়, তখন তাকে উলফ প্যাক বা প্যাক অব উলফ বলা হয়। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ আগস্ট ২০১৯/মামুন খান/রফিক