আইন ও অপরাধ

কাউন্সিলর হয়ে রাতারাতি বিপুল সম্পদের মালিক হন রাজিব

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর রাতারাতি বিপুল সম্পদের মালিক হন বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজিব।

রাজিবের বিরুদ্ধে দেয়া অস্ত্র আইনের মামলার চার্জশিটে এমনটাই উল্লেখ করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‍্যাব-২ এর এসআই (নিরস্ত্র) প্রণয় কুমার প্রামাণিক।

তিনি রাজিবের বিরুদ্ধে গত ২২ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। গত ২৫ নভেম্বর ঢাকা মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালতে চার্জশিট উপস্থাপন করা হয়। আদালত চার্জশিট দেখেছেন।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) এ মামলা তারিখ ধার্য করা হয়েছে। এ দিন আদালত মামলার বিচারের জন্য ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলির আদেশ দিবেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।

চার্জশিটে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, তারেকুজ্জামান রাজিব দীর্ঘদিন যাবত অবৈধ অস্ত্র নিজের কাছে রেখে তার সহযোগিদের সহযোগিতায় অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করে ভূমিদস্যুতা, চাঁদাবাজি,  অবৈধ দখলদারিত্ব এবং মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল।

আসামি ধূর্ত ও চালাক প্রকৃতির। তার বিরুদ্ধে কেউ ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস করে না। রাজিবের নামে মোহাম্মদপুর, চাঁদ উদ্যান, রায়েরবাজার বেড়ীবাঁধ এলাকায় নামে-বেনামে বিপুল সম্পত্তি (জায়গা, ফ্ল্যাট) রয়েছে । তিনি একাধিক নতুন নতুন ব্র্যান্ডের যানবাহন ব্যবহার করেন। যা মূলত ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি রাতারাতি এসব সম্পদ অর্জন করেন।  স্থানীয় তদন্তে আসামির স্বভাব-চরিত্র সন্দেহজনক বলে জানা যায়।

১৯ অক্টোবর রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাড়ি থেকে তারেকুজ্জামান রাজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন ‌র‍্যাব-১ এর ডিএডি মিজানুর রহমান।

অস্ত্র মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ১৯ অক্টোবর র‍্যাব-১ গোপন সংবাদে জানতে পারে, রাজধানীর ভাটারা থানাধীন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকাস্থ সি ব্লকের আফতাব উদ্দিন আহমেদ রোডের ৪০৪ নং বাড়ীর বি-৭ ফ্ল্যাটে তারেকুজ্জামান রাজিব বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ অবস্থান করছে। পরে র‍্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের উপস্থিতিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। রাজিবের দখলে ও নিয়ন্ত্রনে থাকা অস্ত্র ও গুলি এবং অবৈধ মাদক উদ্ধার করা হয়।

গত ২১ অক্টোবর দুই মামলায় রাজিবের সাত দিন করে ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ৪ নভেম্বর রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর অস্ত্র আইনের মামলায় গত ১১ নভেম্বর চার দিন এবং ১৫ নভেম্বর মাদক মামলায় তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ১৯ নভেম্বর রিমান্ড শেষে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন। ঢাকা/মামুন খান/জেনিস