রাজধানীর মিরপুর পুলিশ লাইনে নায়েক শাহ মো. আবদুল কুদ্দুসকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে তার স্ত্রী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে ঢাকার সিএএম আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইলিয়াস মিয়ার আদালতে মামলাটি দায়ের করেন আবদুল কুদ্দুসের মা সৈয়দা হেলেনা খাতুন।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামিরা হলেন- আবদুল কুদ্দুসের স্ত্রী সৈয়দা হাবিবুন্নাহার ওরফে নাহিন এবং শাশুড়ি রুনিয়া বেগম।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আবদুল কুদ্দুসের স্ত্রী সৈয়দা হাবিবুন্নাহার ওরফে নাহিন পরকিয়ায় আসক্ত ছিলেন। সারাক্ষণ ফোনে কথা বলতেন। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে সালিশ হয়। পরে সমঝোতা হয়। কিন্তু নাহিন এরপরও পরকিয়া চালিয়ে যান। আবদুল কুদ্দুস তার শাশুড়িকে এ বিষয়ে জানালে ভিকটিমের পরিবারকে নারী নির্যাতনের মামলা এবং চাকরি হারানোর ভয় দেখানো হয়। তাদের কারণে আবদুল কুদ্দুস আত্মহত্যায় প্ররোচিত হন।
ইশরাত হাসান বলেন, আবদুল কুদ্দুস পুলিশ সদস্য। ভিকটিমের পরিবার কাফরুল থানায় মামলা দায়ের করতে যান। দুঃখের বিষয়- থানা পুলিশ মামলা নেয়নি। এজন্য তার বৃদ্ধা মা আজ আদালতে এসে মামলাটি দায়ের করেন।
গত ২৩ জানুয়ারি ভোরে রাজধানীর মিরপুর পুলিশ লাইনে আবদুল কুদ্দুস নিজের রাইফেল দিয়ে আত্মহত্যা করেন। ভোর সোয়া ৫টার দিকে তিনি অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র নিয়ে ডিউটির জন্য বের হন। পরে পুলিশ লাইনের মাঠের এক পাশে দাঁড়িয়ে আত্মহত্যা করেন।
আবদুল কুদ্দুস সিলেটের রসুলপুরের মৃত শাহ মো. আবদুল ওয়াহাবের ছেলে।
আত্মহত্যার আগে ওই পুলিশ সদস্য ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন ‘আমার মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করব না। আমার ভেতরের যন্ত্রণাগুলো বড় হয়ে গেছে, আমি আর সহ্য করতে পারছি না। প্রাণটা পালাই পালাই করছে।
তবে অবিবাহিতদের প্রতি আমার আকুল আবেদন- আপনারা পাত্রী পছন্দ করার আগে পাত্রীর মা ভালো কি না তা আগে খবর নেবেন। কারণ, পাত্রীর মা ভালো না হলে পাত্রী কখনোই ভালো হবে না। ফলে আপনার সংসারটা হবে দোজখের মতো।
সুতরাং সকল সম্মানিত অভিভাবকদের প্রতি আমার শেষ অনুরোধ, বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেবেন। আল্লাহ হাফেজ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, উত্তর বিভাগ (এসটিএফ), মিরপুর-১৪, ঢাকা।’ ঢাকা/মামুন খান/রফিক