আইন ও অপরাধ

সরকারি কর্তার মোবাইলে ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ দুদকে

সরকারি দপ্তরের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে বড় অংকের ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

ওই কর্মকর্তার বিষয়ে তথ্য প্রমাণ চেয়ে এরই মধ্যে বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে চিঠি দিলেও তার জবাব মেলেনি। যা উদ্বেগজনক বলছে দুদক। যদিও তদন্তের স্বার্থে ওই কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করেনি সংস্থাটি।

মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক আ ন ম আল ফিরোজের সভাপতিত্বে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসসমূহের (এমএফএস) নির্বাহীদের নিয়ে এক সভায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

সভায় তথ্য ভাণ্ডার থেকে আর্থিক লেনদেনের রিয়েল টাইম তথ্য প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে কৌশল নির্ধারণের জন্য আলোচনা হয়।

সভার দুদক মহাপরিচালক দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের নির্দেশনা উদ্ধৃতি করে বলেন, ‘দুদকের গোয়েন্দা ইউনিট এক রিপোর্টের মাধ্যমে জানিয়েছে, একটি সরকারি দপ্তরের এক কর্মকর্তা মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে ঘুষের টাকা গ্রহণ করেছেন। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট দুদকে কোনো সন্দেহজনক লেনদেনের রিপোর্ট (এসটিআর) করেনি। বিষয়টি উদ্বেগজনক।’

ফিরোজ বলেন, ‘যে কোনো সরকারি কর্মকর্তা যদি সন্দেহজনক লেনদেনে সম্পৃক্ত থাকেন, তা অবশ্যই দুদককে জানাতে হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংক এক সার্কুলারের মাধ্যমে সম্প্রতি এমএফএস একাউন্টের সকল ধরনের ক্যাশ ইন/ক্যাশ আউটের ডিজিটাল মানি রিসিটের বিস্তারিত তথ্য দুদকের অনুসন্ধান বা তদন্তের প্রয়োজনে সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছে।

একই সার্কুলারে মাধ্যমে এমএফএস সমূহের গ্রাহক এবং লেন-দেনের তথ্য ভাণ্ডার থেকে দুদককে রিয়েল টাইম তথ্য প্রদানের বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয়েছে এবং একাধিক একাউন্টের মাধ্যমে অস্বাভাবিক লেনদেনরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়েও পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রতিনিধি মো. আজমল হোসেন বলেন, ‘ঘুষ সংক্রান্ত কোনো এসটিআর থাকলে তা অবশ্যই দুদককে জানানো হবে। এখন থেকে সরকারি কর্মকর্তাদের যে কোনো সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পেলে দুদককে জানানো হবে।’

দুদক মহাপরিচালক ফিরোজ বলেন, ‘এমএফএস প্রতিষ্ঠানসমূহের নিজস্ব ডাটাবেজ থেকে অ‌্যাপলিকেশন ইন্টারফেসের মাধ্যমে গ্রাহক লেনদেনের তথ্য দুদকে দিতে হবে। এসব মাধ্যমে যেসব ঘুষের লেনদেন হচ্ছে তা নিয়ন্ত্রণে দুদক আইনি দায়িত্ব পালন করবে। দুদক অর্থের গতিবিধি অনুসরণ করবে (ফলো দ্য মানি)। ব্যক্তির অবস্থান চিহ্নিত করে, অপরাধীদের আইন-আমলে নিয়ে আসবে।’

এসময় নগদের প্রতিনিধি মো. সাফায়েত আলম দুদককে এ জাতীয় তথ্য প্রদানে তাদের সম্মতির কথা জানান।

বিকাশ এবং রকেটের প্রতিনিধি জানান ইতোমধ্যেই দুদককে তথ্য প্রদানের জন্য তারা ফোকালপয়েন্ট কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছেন। দুদক যে কোনো তথ্য চাইলেই তারা তা এখনই দিতে পারেন।

সভায় অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দুদকের মানিলন্ডারিং অনুবিভাগের পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী, দুদকের ফোকালপয়েন্ট কর্মকর্তা ও সিস্টেম এনালিস্ট রাজীব হাসান, রকেটের এসইভিপি আবেদুর রহমান সিকদার, ডাকবিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. হারুনুর রশীদ প্রমুখ। ঢাকা/এম এ রহমান/সনি