আইন ও অপরাধ

মাতৃসদনে দুর্নীতি : ১৪ ডাক্তারসহ ১৮ জনের জামিন

আজিমপুর মাতৃসদন ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে কেনাকাটায় দুর্নীতির চার মামলায় ১৪ ডাক্তারসহ ১৮ জন আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন।

মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন আসামিরা। শুনানি শেষে আদালত জামিনের আদেশ দেন।

জামিন পাওয়া আসামিরা হলেন- আজিমপুর মাতৃসদন ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ইসরাত জাহান, সাবেক সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য ডা. মাহফুজা খাতুন, সাবেক সহকারী কো-অর্ডিনেটর (ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ) ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য ডা. চিন্ময় কান্তি দাস;

সাবেক মেডিকেল অফিসার ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য ডা. সাইফুল ইসলাম, মেডিকেল অফিসার (শিশু) ও বাজারদর যাচাই কমিটির সদস্য ডা. বেগম মাহফুজা দিলারা আক্তার, মেডিকেল অফিসার ও বাজারদর যাচাই কমিটি সদস্য ডা. নাজরীনা বেগম;

পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য ডা. জেবুন্নেসা হোসেন, সিনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনি) ও বাজারদর যাচাই কমিটির সভাপতি ডা. রওশন হোসনে জাহান, মাতৃসদনের সাবেক সহকারী কো-অর্ডিনেটর (ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ) ও পরিবার পরিকল্পনার অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডা. মো. লুৎফুল কবীর খান;

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. কাজী গোলাম আহসান, পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সাবেক অধ্যক্ষ ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য ডা. পারভীন হক চৌধুরী, মাতৃসদনের বিভাগীয় প্রধান (শিশু) ও বাজারদর যাচাই কমিটির সদস্য ডা.মো. আমির হোসাইন;

জুনিয়র কনসালট্যান্ট (শিশু) ডা. নাদিরা আফরোজ, মেডিকেল অফিসার ডা. আলেয়া ফেরদৌসী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সদস্যসচিব (বাজারদর যাচাই কমিটি) জহিরুল ইসলাম, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. নাছের উদ্দিন, মনার্ক এস্টাব্লিশমেন্টের মালিক মো. ফাতেনুর ইসলাম ও মেসার্স নাফিসা বিজনেস কর্নারের মালিক শেখ ইদ্রিস উদ্দিন (চঞ্চল)।

মামলাটিতে আসামিরা হাইকোর্ট থেকে জামিনে ছিলেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে আবারো জামিন আবেদন করেন। আসামি পক্ষে জামিন শুনানি করেন মো. রশিদ উন নবী, মো. বাবরুল আমিন, জয়নাল আবেদীন ও খাজা গোলামুর রহমান।

দুদকের পক্ষে মোশাররফ হোসেন কাজল, মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর ও মীর আহাম্মেদ আলী সালাম জামিনের বিরোধীতা করেন।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিনের আদেশ দেন।

গত বছর ১৭ ডিসেম্বর ২৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ চারটি মামলা করেন সংস্থাটির উপপরিচালক আবুবকর সিদ্দিক।

বাজারদরের চেয়ে দুই থেকে তিন গুণ বেশি দামে ওষুধ, সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি ও প্যাথলজিসামগ্রী কেনাকাটায় প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে মামলাগুলোতে।

মামলায় ১৭ জন চিকিৎসক ও সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের ৮ জনকে আসামি করা হয়। আজিমপুর মাতৃসদন ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক ইসরাত জাহানকে চারটি মামলাতেই আসামি করা হয়।

জানা যায়, ২০১৪-১৫ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত চার অর্থবছরের কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করা হয়। দুদকের অনুসন্ধান বলছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে কার্যাদেশ অনুযায়ী ঠিকাদারকে ওষুধ সরবরাহের বিপরীতে ৩২ লাখ ৯১ হাজার ৭২০ টাকার বিল পরিশোধ করা হয়।

অথচ খুচরা মূল্য ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মূল্য অনুযায়ী ওই একই ওষুধের সর্বোচ্চ মূল্য ১৬ লাখ ৪৫ হাজার ২৯৮ টাকা। বাকি টাকা অতিরিক্ত দেওয়া হয়েছে। এভাবে চার অর্থবছরে একই প্রক্রিয়ায় প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়ছে। ঢাকা/মামুন খান/সনি