আইন ও অপরাধ

সাধারণ ছুটি শেষ হলেই আজহারের রিভিউ

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে সর্বশেষ আইনি সুযোগ রিভিউ আবেদনের সময়সীমা শেষ হয়েছে।  কিন্তু এখনও রিভিউ আবেদন দাখিল করেননি।  তবে তার আইনজীবী বলছেন, রিভিউ আবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। আদালত খুললেই তামাদি আইনের সুযোগ নিয়ে এ আবেদন দাখিল করা হবে।

গত ৩০ মার্চ (সোমবার) এটিএম আজহারুল ইসলামের রিভিউ আবেদনের সময়সীমা শেষ হয়েছে।

জামায়াত নেতা আজহারের অন্যতম আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির রাইজিংবিডিকে বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে সুপ্রিম কোর্ট বন্ধ থাকায় রিভিউ আবেদন করা যায়নি।  তবে রিভিউ আবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। আদালত যেদিন খুলবে, সেদিনই রিভিউ আবেদন দাখিল করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, রিভিউ আবেদনের সময়সীমা ১৫ দিন। তবে এই ১৫ দিনের মধ্যে আবেদন দাখিল করতে  গিয়ে যদি দেখেন যে তা গ্রহণ করার মতো কেউ নেই, অর্থাৎ আদালত বন্ধ, তাহলে আদালত খোলার পর আবেদন দাখিল করার সুযোগ পাবেন।

এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে রিভিউ আবেদন করার জন্য আপিল বিভাগের রায় প্রকাশের পর থেকে পরবর্তী ১৫ দিন সময় বেঁধে দেন।

এটিএম আজহারের ক্ষেত্রে এই ১৫ দিনের সময় শেষ হয়েছে ৩০ মার্চ (সোমবার)।  কিন্তু এই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তিনি রিভিউ আবেদন দাখিল করতে পারেননি।

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে গত ২৯ মার্চ থেকে সুপ্রিম কোর্টসহ সারাদেশের আদালতে সাধারণ ছুটি থাকায় রিভিউ আবেদন দাখিল করা যায়নি।  সাধারণ ছুটি শেষে সুপ্রিম কোর্ট যেদিন খুলবে, সেদিনই এই রিভিউ আবেদন দাখিল করা হবে।  তিনি বলেন, এক্ষেত্রে তামাদি আইন অনুসরণ করা হবে।  তামাদি আইন অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের শেষ দিন যদি ছুটি বা বন্ধ থাকে, তবে আদালত খোলার প্রথম দিনটিকে শেষ দিন হিসেবে ধরে নিতে হবে।

তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী আসামি রায়ের প্রত্যায়িত অনুলিপি পাওয়ার দিন থেকে দিন গণনা শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা আবেদন করলেও আজ পর্যন্ত প্রত্যায়িত অনুলিপি পাইনি। যদিও আমাদের অ্যাডভোকেট অন রেকর্ডকে একটি কপি দেওয়া হয়েছে গত ১৬ মার্চ।  সেই দিনটি ধরেই ৩০ মার্চ হচ্ছে রিভিউ আবেদন করার শেষ দিন।

আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যদি তিনি রিভিউ আবেদন দাখিল করার সুযোগ পান, তবে সেক্ষেত্রে ওই আবেদনের উপর আপিল বিভাগে শুনানি না হওয়া পর্যন্ত দণ্ড কার্যকর করার প্রক্রিয়া স্থগিত থাকবে। আর যদি তিনি রিভিউ আবেদন না করেন তবে সেক্ষেত্রে দণ্ড কার্যকর করার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। এরপর রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চেয়ে প্রাণভিক্ষার আবেদন করার সুযোগ পাবেন তিনি। তিনি যদি রাষ্ট্রপতির কাছে কোনো আবেদন না করেন তবে সাজা কার্যকর করতে আর কোনো বাধা থাকবে না।

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর এক রায়ে আজহারকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন তিনি।  আপিলের ওপর শুনানি শেষে গতবছর ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে তিনটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের সাজা বহাল রাখেন। গত ১৫ মার্চ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। ঢাকা/মেহেদী/জেডআর