আইন ও অপরাধ

রেনু হত্যা: এক বছরেও শেষ হয়নি তদন্ত

রাজধানীর বাড্ডায় প্রাইমারি স্কুল গেটে ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনুকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার বছর পার হলেও মামলার তদন্ত শেষ হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের বিলম্বের সুযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ১৪ আসামির ৫ জনই জামিনে বের হয়ে গেছেন।  এ মামলার তদন্ত শেষ না হওয়ায় বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন রেনুর পরিবার।

গত বছরের ২০ জুলাই সন্তানকে ভর্তি করার খোঁজখবর নিতে গিয়ে ছেলেধরা গুজবে গণপিটুনির শিকার হয়ে নিহত হন রেনু।  এ ঘটনায় অজ্ঞাত পাঁচশ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন রেনুর ভাগ্নে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু।  পরে বাদী বাড্ডা সরকারি প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাহনাজ বেগমসহ প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরও আসামি করতে চেয়ে আদালতে সম্পূরক এজাহার দাখিল করেন।  পরে আদালত তদন্তের নির্দেশ দেন।

এদিকে মামলার পর প্রথমে বাড্ডা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক প্রায় ৫ মাস তদন্ত করেন।  তিনি ১৪ জন আসামি গ্রেপ্তার করেন।  এর মধ্যে ৩ জন দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেয়। কিন্তু প্রায় সাত মাস আগে মামলার তদন্তের ভার ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।  মামলা সম্পর্কে তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর আব্দুল হক বলেন, মামলাটির তদন্ত চলছে।  শর্ট টাইম ২/১ মাসের মধ্যে মামলাটির চার্জশিট দাখিল করবো।

উল্লেখ থাকে, আব্দুল হক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন।

মামলার বাদী নাসির উদ্দিন টিটু বলেন, খালাকে হারিয়েছি এক বছর হয়ে গেছে।  কিন্তু মামলার তদন্ত শেষ হলো না।  কবে তদন্ত শেষ হবে আর কবে বিচার পাবো? এখন তো মনে হচ্ছে বিচারই পাওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, আমি ভিডিও ফুটেজটি দেখেছি।  মারধরে ৪০ থেকে ৫০ জনের সম্পৃক্ততা রয়েছে।  যার মধ্যে কমপক্ষে ২০ থেকে ২২ জন সরাসরি জড়িত। সেখানে এ পর্যন্ত ১৪ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। জড়িত অন্যদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী শামীম দাঁড়িয়া ও আক্তার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আসামিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত না।  মামলার তদন্ত চলছে।  আমরাও চাই তদন্ত দ্রুত শেষ হোক। তদন্তে যারা দোষী তাদের সাজা হবে। আর নির্দোষ যারা মুক্তি পাবে।

উল্লেখ্য, রেনুর ১১ বছরের ছেলে তাহসিন আল মাহির ও চার বছরের মেয়ে তাসনিম তুবা রয়েছে।  রেনু লেখাপড়া শেষে আড়ং ও ব্র্যাকে চাকরি করেছেন। স্কুলেও করেছেন শিক্ষকতা। ২০১৭ সালে স্বামী তসলিম হোসাইনের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকে মায়ের সঙ্গে মহাখালীর ওয়্যারলেস গেটের একটি ভাড়া বাসায় ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বসবাস করছিলেন। মামুন/সাইফ