আইন ও অপরাধ

টিকটকের আড়ালে অপরাধ

কথিত টিকটক তারকা অপু ও তার সহযোগীকে গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসছে তাদের নানা অজানা কাহিনি। টিকটক ভিডিও তৈরির আড়ালে নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত তারা। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মারামারি, হামলা, চুরি, ভয়ভীতি দেখানো ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধে। গ‌্যাংয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতাও আছে তাদের। তাদের বিরুদ্ধে কিশোর-তরুণদের বিপথগামী করার অভিযোগ উঠেছে।

গত রোববার (২ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরার ছয় নম্বর সেক্টরে স্থানীয় লোকজনকে মারধরের অভিযোগে অপু ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। সোমবার (৩ আগস্ট) অভিযান চালিয়ে অপু ও তার এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

রোববার (৩ আগস্ট) উত্তরা পূর্ব থানায় ওই মামলা করেছেন মারধরের শিকার হওয়া প্রকৌশলী মেহেদি হাসান রবিন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেছেন, উত্তরার আলাওল অ্যাভিনিউয়ে সড়ক অবরোধ করে টিকটক ভিডিও বানাচ্ছিল অপু ও তার সহযোগীরা। রাস্তা বন্ধ দেখে গাড়ির হর্ন দেন রবিন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অপু ও তার সহযোগীরা রবিনসহ তার বন্ধুদের মারধর করে।

পুলিশ জানতে পেরেছে, অপু ও তার বন্ধু রনি, মুরাদ, জমির উদ্দিন, নাজমুল, শাহদাত হোসেন শাকিল, জনি, আরমানসহ ২০-২৫ জনের একটি দল আছে। তারা সবাই কিশোর। তারা দেশীয় অস্ত্র মজুদ রাখে। এসব দিয়ে তারা নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে। তরুণীদেরকে উত্যক্ত করে তারা। টিকটক ভিডিও বানানোর নামে এসব অপরাধ করত তারা। তবে টিকটকে জনপ্রিয় হওয়ায় অপুর এসব কর্মকাণ্ড সন্দেহের চোখে দেখা হতো না।

মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) বিকেলে উত্তরা পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘মামলার তদন্তের স্বার্থে অপুকে রিমান্ডে নেওয়া দরকার। কিন্তু আদালত তার রিমান্ড মঞ্জুর করেননি। আমরা আবার তার রিমান্ড চাইব। অপুর বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ আছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে জেনেছি।’

এদিকে, সোমবার (৩ জুলাই) সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ‘সাইবার-৭১’ অফিসিয়াল পেজে জানানো হয়েছে, অপু ও মামুনের টিকটক ও লাইকি আইডি ব্যান করা হবে।

চীনা অ্যাপ টিকটকে নানা ধরনের বিকৃত ভিডিও তৈরি করে আলোচনায় আসে অপু। নতুন ‘গ্যাং’ তৈরির অভিযোগ আছে অপু ও মামুনসহ একাধিক টিকটকারের বিরুদ্ধে। টিকটকের আড়ালে নিজেদের দলে স্কুলপড়ুয়া কিশোরদের ভেড়ায় তারা। উত্তরাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গ্যাং গড়ে তুলেছে অপু ও তার সহযোগীরা।

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘মারামারি ও হিংসাত্মক বিষয় তরুণ সমাজকে আকৃষ্ট করে। তাদের ভেতর গ্রুপিংও হয়। পড়াশোনা বাদ দিয়ে তারা এগুলো নিয়ে মেতে থাকে। পরে ভয়ঙ্কর অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।’