আইন ও অপরাধ

ক্যাসিনোকাণ্ড: আনিছুর ও সুমীর ১৬ কোটি টাকার নথি জব্দ

যুবলীগের বহিষ্কৃত দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিছুর রহমান ও স্ত্রী সুমী রহমানের ১৬ কোটি টাকার আয়কর নথি জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) অবৈধ সম্পদ মামলার তদন্তে উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান তাদের এসব নথি জব্দ করেন।

২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর কাজী আনিছুর রহমান ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা ও সুমি রহমানের ১ কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগে মামলা করে দুদক।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কাজী আনিছুর রহমান ২০১৮-১৯ অর্থবছরে নিজ নামে ও বেনামে অর্জিত ৫ কোটি ৭৩ লাখ ৫৬ হাজার ৬০০ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং এক কোটি ৭২ লাখ ৩৬ হাজার ৮২১ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।  এর মধ্যে ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্লান সেন্টার লেভেলে ১টি ফ্ল্যাট, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর রসুলপুরে ২৪.৫০ শতাংশ জমি, ঢাকার আর কে মিশন রোডে আমিন ভবনের পঞ্চম তলায় ১৩০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, ঢাকার স্বামীবাগ রোডে ৮২০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, ধানমন্ডি রোড নম্বর-৭ এ একটি ফ্লাট, ঢাকার শুক্রাবাদের শেরেবাংলা নগর ৭৫০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, ধানমন্ডি ১৫ নম্বর রোডের একটি ফ্ল্যাটসহ সর্বমোট ৫ কোটি ৭৩ লাখ ৫৬ হাজার ৬০০ টাকা স্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।  একইভাবে আরফিন এন্টারপ্রাইজ কোম্পানির শেয়ার মূল্য ৮৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, স্টেশনের শেয়ার মূল্য ৩৬ লাখ টাকা, প্রাইজবন্ড তিন লাখ টাকা, গাড়ি মূল্য ১১ লাখ ২৫ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ১ কোটি ৭২ লাখ ৩৬ হাজার ৮২১ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।

বিএফআইইউ থেকে প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র অনুসারে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যাংকে রক্ষিত ব্যাংক এশিয়া, প্রাইম ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ইউসিবিএল ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ও ডাচ বাংলা ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট, সেভিং অ্যাকাউন্ট এফডিআর এইচটিসিসহ বিভিন্ন ফার্মে ৫ কোটি ৩৪ লাখ ৬৭ হাজার ৪৯৯ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।  সব মিলিয়ে ১২ কোটি ৮০ লাখ ৬০ হাজার ৯২০ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। যা আয়কর নথিতে উল্লেখ নেই এবং এসবের সপক্ষে কোনো সুনির্দিষ্ট বৈধ উৎস নেই।

অন্যদিকে সুমি রহমানের নামে ১ কোটি ২৫ লাখ ৫০০ টাকার স্থাবর ও ৫৬ লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকার অস্থাবর অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়ায় দুদক আইনে মামলা করা হয়েছে।

এরই মধ্যে আদালতের নির্দেশে কাজী আনিছুর রহমান ও সুমি রহমানের ২০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ জব্দ করে দুদক।

কাজী আনিছুর রহমান বর্তমানে দুবাইতে অবস্থান করছেন।  ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।  এরপর গত ৩০ সেপ্টেম্বর অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ শুরু করে দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন।  তার নেতৃত্বে আট সদস্যের টিম অনুসন্ধানের দায়িত্ব পালন করছেন।