আইন ও অপরাধ

ঋণের হতাশা থেকেই সন্তানদের ও নিজেকে হত্যাচেষ্টা: পুলিশ

বিভিন্ন ব্যক্তি, সমিতি ও ব্যাংকে ঋণগ্রস্ত ছিলেন রাজধানীর হাজারীবাগের বোরহানপুরের বাসিন্দা মো. জাবেদ হাসান। এই ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে তিনি হতাশা ও চিন্তাগ্রস্ত ছিলেন। এতে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে প্রথমে দুই সন্তানের গলায় ছুরি চালায় এবং পরে জাবেদ নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।

আজ বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বোরহানপুরে এ ঘটনার পর সাত বছর বয়সী মেয়ে রোজা মারা যায়। গুরুতর অবস্থায় বাবা জাবেদ হাসান ও তার ছেলে রিজন (১৪) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

রাতে হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, বোরহানপুরের ১০ নম্বর গলির বাসার নিচে মোবাইল ও কসমেটিকসের দোকান আছে জাবেদের। বিভিন্ন ব্যক্তি বা ব্যাংক থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ১০ লাখ টাকা ঋণ নেন তিনি। কিন্তু কিস্তি ঠিকমতো পরিশোধ করতে না পেরে চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। হতাশা দেখা দেয় তার মধ্যে। এ সব সইতে না পেরে তিনি প্রথমে দুই সন্তানকে হত্যাচেষ্টা চালান এবং পরে নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

থানা পুলিশ জানায়, পারিবারিক বা স্বামী-স্ত্রীর কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে জাবেদের স্ত্রী রিমাকে হাজারীবাগ থানা পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এদিকে, রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আলাউদ্দিন রাইজিংবিডিকে বলেন, বাবা জাবেদ হাসান ও ছেলে রিজনকে নাক কান গলা বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। অস্ত্রোপচারের পর বলা যাবে তাদের বিষয়ে। তবে তারা শঙ্কামুক্ত নন। গলার অনেকটা কেটে গেছে।

স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাবেদ দুই সন্তান রোজা, রিজন ও স্ত্রীকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বোরহানপুরের এই বাসায় বাস করে আসছেন। জাবেদই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। কিন্তু করোনার কারণে তার ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছিল। পারিবারিক খরচে চালাতে তিনি আর্থিক অনাটনে পড়েন।

জাবেদ হাসানের ভাই মেহেদি হাসান রিংকু বলেন, কারো সঙ্গে ঠিকমতো কথাও বলতেন না জাবেদ। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে বিভিন্ন সময় খারাপ ব্যবহার করতেন। ঘটনার দিন বিকেলে দোতালার বাসায থেকে নিচে নেমে দোকানে আসেন। পরে আবার দোতলায় উঠে সবার অজান্তে দুই সন্তানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কাটেন, এরপর জাবেদ নিজের গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

বিকেলে দুই সন্তান ও বাবাকে গুরুতর জখম অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। এ বিষয়ে হাজারীবাগ থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে ওসি সাজ্জাদুর রহমান জানিয়েছেন।