আইন ও অপরাধ

৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার: আপিল বিভাগের নির্দেশনা বাস্তবায়িত না হওয়ায় ক্ষোভ

ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার সংক্রান্ত আপিল বিভাগের নির্দেশনা বাস্তবায়িত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। 

আদালত বলেছেন, এই রায়টি বাস্তবায়নের দিকে নজর দেওয়া উচিত। আমরা সেভাবেই পর্যবেক্ষণ দেবো। 

বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) মধ্যপ্রাচ্যফেরত ২১৯ প্রবাসীকে সিআরপিসির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

করোনাকালে মধ্যপ্রাচ্য বিশেষ করে কুয়েত, বাহরাইন ও কাতারফেরত ২১৯ জন প্রবাসীকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়। কোয়ারেন্টাইন শেষে কি কারণে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে তা সুনির্দ্দিষ্টভাবে উল্লেখ না থাকায় হাইকোর্টে মামলা করেন কারাগারে থাকা বেশ কয়েকজন প্রবাসী। শুনানি শেষে হাইকোর্ট ৫৪ ধারার মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। একইসঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ঢাকার সিএমএমএমের কাছে ব্যাখ্যা চান। 

আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এদিন হাইকোর্টে হাজির হন তুরাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শফিউল্লাহ। আদালতে দাখিল করা তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যাদেরকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে তারা বিদেশে গিয়ে কোন কোন অপরাধ সংঘটনের জন্য দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। এর মধ্যে কেউ ৫ বছর থেকে ২০ বছর পর্যন্ত দণ্ডিত। অপরদিকে সিএমএমএমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মামলাটি নিষ্পত্তি করা হয়েছে।

শুনানির সময় প্রবাসীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যের্তিময় বড়ুয়া বলেন, প্রবাসীদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে উপস্থাপনের সময় তদন্ত কর্মকর্তা কোনো কেস ডায়েরি উপস্থাপন করেননি। কিন্তু আপিল বিভাগের রায়ে বলা হয়েছে শুরু থেকেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কেস ডায়েরি মেইনটেইন করতে হবে। আর কেস ডায়েরি না থাকলে ম্যাজিস্ট্রেট অঙ্গীকারনামা নিয়ে গ্রেপ্তারদের মুক্তি দেবেন। এই কেস ডায়েরি না দেওয়ায় দণ্ডবিধির ২২০ ধারা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আর ৫৪ ধারায় কাউকে ১৫ দিনের বেশি আটক রাখারও সুযোগ নেই। 

কিন্তু দেখা যাচ্ছে আপিল বিভাগের রায়ের নির্দেশনা কেউ বাস্তবায়ন করছে না। সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী উচ্চ আদালতের রায়ই আইন। তা সবাইকে মানতে বাধ্য। এ পর্যায়ে আদালত বলেন, করোনাকালে ২১৯ জন প্রবাসীর তথ্য বিভিন্ন দূতাবাসের মাধ্যমে সংগ্রহ করেছে তদন্ত কর্মকর্তা। সেটি আমরা দেখেছি। আর ম্যাজিস্ট্রেট মামলাটির কার্যক্রম শেষ করেছেন। এ কারণে মামলাটি নিষ্পত্তি করে দেওয়া হলো।