আইন ও অপরাধ

এফডিসির যন্ত্রপাতি কেনায় অনিয়ম: ১ মালয়েশিয়ানসহ ৩ জনের কারাদণ্ড

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) মালামাল কেনার নামে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় ১ মালয়েশিয়ানসহ ৩ জনকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মালয়েশিয়ার মেসার্স নভেলকো’র (এম)-এর কর্মকর্তা জন নোয়েল ও যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী স্থানীয় প্রতিনিধি খন্দকার শহীদুলকে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর ‘ক্রয়কারী প্রকল্প’ পরিচালক শফিকুল ইসলামকে ৩ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।  অনাদায়ে আরও এক মাস কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। 

এছাড়া, ৩ জনকে আরও ৩০ লাখ ৪২ হাজার ২০ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অসাধু উপায়ে আত্মসাৎ করা ৯১ লাখ ২৬ হাজার ৬০ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আসামিরা পলাতক থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

এফডিসির আধুনিকায়নে যন্ত্রপাতি কেনার নামে সরকারের ৩ কোটি ৪৬ লাখ ৫৮ হাজার ৫২০ টাকার আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগে ২০১৫ সালের ৭ অক্টোবর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মামলা দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর উপ-পরিচালক হামিদুল হাসান। মামলায়  জন নোয়েল,  খন্দকার শহীদুল,  শফিকুল ইসলাম এবং বিএফডিসি’র তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়কে আসামি করা হয়েছে।

এজাহারে বলা হয়েছে, ক্রয় প্রক্রিয়ায় পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়সহ এফডিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পেশাগত দায়-দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেছেন। প্রাক-জাহাজীকরণ পর্যায়ে প্রযোজ্য বিধিবিধান অনুসরণের পরিবর্তে মনগড়া বিশ্লেষণের ভিত্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তে চীনের তৈরি মালামাল জাহাজীকরণের অনুমতি দেন তারা। মালামাল গ্রহণ কমিটির ‘সুপারিশ আছে বলে মিথ্যা তথ্য’ দিয়ে চুক্তি বহির্ভূত চীনের তৈরি মালামাল গ্রহণ করে মূল্য পরিশোধ করেন। নিয়ম বহির্ভূত কার্যকলাপ সংঘটনে খন্দকার শহীদুল প্ররোচনা দেন। প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলামের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন ও অনুমোদন দেন পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়।

মামলাটি তদন্ত করে দুদক উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী ২০১৭ সালের ২ মার্চ পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়কে অব্যাহতি দিয়ে তিন জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৮ সালের ২২ জানুয়ারি তিন আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলাটির বিচার চলার সময় আদালত চার্জশিটভুক্ত ২১ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত।