আইন ও অপরাধ

মামুনুলের রিমান্ড শুনানি নিয়ে আইনজীবীরা যা বললেন 

বেআইনি সমাবেশ, হত্যাচেষ্টা, চুরির অভিযোগে মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার (১৯ এপিল) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারীর আদালত এ আদেশ দেন।

এর আগে বেলা ১১টা ৯ মিনিটে মামুনুল হককে আদালতে হাজির করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। সংশ্লিষ্ট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাজেদুল হক মামুনুল হকের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু, সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর আজাদ রহমান, হেমায়েত উদ্দিন খানসহ কয়েকজন সাত দিনেরই রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন।

শুনানিতে তারা বলেন, গত বছরের ৬ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে মোহাম্মদপুরের একটি মসজিদে আমল করাকালীন সময়ে মামুনুল হক এবং তার ভাই মোহতামিম মাহফুজুল হকের নির্দেশে এ মামলার বাদী জি এম আলমগীর শাহিনসহ অন্যদের আমলে বাধা দেন।  বাদীসহ অন্যদের মারধর করে মসজিদ থেকে বের করে দেন।  বাদীর পকেট থেকে মোবাইল, টাকা নিয়ে যায়। এ ঘটনায় মামুনুল হক এবং তার ভাইসহ অন্যান্যরা জড়িত। তারা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে। এ অবস্থায় পুলিশ মামুনুল হকের ৭দিনের রিমান্ড আবেদন করে। আমরা বলেছি, যেহেতু ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে, বাদীকে মারধর করাসহ টাকা নিয়ে যাওয়া হয়েছে, আরও কারা কারা সম্পৃক্ত আছে, পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারসহ জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। এজন্য তার সাত দিনেরই রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে সাত দিনেরই রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। জামিন নামঞ্জুর হয়েছে।

তিনি বলেন, আসামিরা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে।  আমি মসজিদে ঢুকতে পারবো না, এটা তো হতে পারে না। ঘটনার সাথে মামুনুল হকসহ আরও অনেকে জড়িত।  মামলাটি তদন্ত পর্যায়ে আছে।  গত বছরের ৬ মার্চ মামলা দায়ের করা হয়।  মামুনুল হক পলাতক ছিলেন। তিনি আদালতে হাজির হননি।  আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা ছিল না তার।  আজ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা হয়েছে।  আদালত তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

আসামির পক্ষে সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাসহ কয়েকজন আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তিনি বলেন, মোহাম্মদপুর থানার একটি মামলায় মামুনুল হকের সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছিল।  রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ ছিল, তিনি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছেন। কারণ এ মামলায় কোনো এক ব্যক্তিকে নাকি মামুনুল হকের নির্দেশে মারধর করে মসজিদ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।  আমাদের কথা হচ্ছে, মামুনুল হক কি নির্দেশ দিয়েছেন, কখন নির্দেশ দিয়েছেন সে সম্পর্কে কোনো বক্তব্য রিমান্ড আবেদনে নেই। গত এক বছর আগের মামলা। মামুনুল হক বাংলাদেশের সর্বত্র বিরাজমান, দেখা গেছে তাকে। এক বছর আগে তাকে গ্রেপ্তার করেননি কেন? গতকাল গ্রেপ্তারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু সেই জিজ্ঞাসাবাদের কোনো রিপোর্ট সেখানে ছিলো না। আসলে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত নয়, মামুনুল হককে জব্দ করতে সুপরিকল্পিতভাবে মামলাটা করা হয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সাত দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। মামুনুল হককে যে রিমান্ড দেওয়া হয়েছে তা অযৌক্তিক, একতরফাভাবে তাকে রিমান্ড দেওয়া হয়েছে।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের আদেশ দেন।

রোববার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।  হত্যাচেষ্টা, চুরির অভিযোগে ২০২০ সালের ৬ মার্চ মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয় তার বিরুদ্ধে।