আইন ও অপরাধ

হেফাজতের সঙ্গে কয়েকজন রাজনীতিকের যোগাযোগ ছিলো : পুলিশ 

রিমান্ডে থাকা হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতারা গোয়েন্দাদের জেরার মুখে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। দেশের কয়েকটি স্থানে তাণ্ডবের সময় জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির একটি অংশের কয়েকজন নেতাদের সঙ্গে হেফাজতের নেতাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল বলে জানান গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। 

শনিবার (২৪ এপ্রিল)  দুপুরে মিন্টু রোডের নিজ কার্যালয়ে ডিবি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ সব কথা বলেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি যে তাণ্ডব হয়েছে, সেখানে শুধু হেফাজত ইসলাম নয়; জামাতে ইসলামী বাংলাদেশ ও মূল ধারার রাজনীতিকদল বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে হেফাজতের নেতাদের যোগাযোগ ছিলো। তারা ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে তাণ্ডবের সময়ও হেফাজতের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন বলে জেরার মুখে হেফাজত নেতারা স্বীকার করেছেন। 

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহবুব আলম বলেন, ‘শাপলা চত্বরে তাণ্ডবের সময় সরকার পতনের নীলনকশা করা হয়। যেখানে হেফাজতের সঙ্গে এসব রাজনৈতিক দল বা এর নেতারা প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রেখেছিলেন। আর গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনকে কেন্দ্র করে ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চট্টগ্রামে যে তাণ্ডব চালানো হয়, সেটিও সরকার পতনের অংশ হিসেবে বলে আমরা অনেকটা নিশ্চিত হয়েছি। এর সঙ্গে কারা জড়িত, তাদের নামও রিমান্ডে গ্রেপ্তারকৃতরা বলছেন।’  

মাহবুবুল আলম আরও বলেন, ‘তারা হেফাজতকে একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিলো হেফাজতের কোমলমতি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের দিয়ে দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা, এটা করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলা। আর এতে তাদের রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়া অনেকাংশে সহজ হবে বলে তারা মনে করেছিলেন।’ 

এ কারণে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির একাংশের নেতারা হেফাজতের তাণ্ডবের সময় শুধু তাদের নির্দেশ দেওয়াই নয়, সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে উৎসাহ দিয়েছেন বলে হেফাজতের নেতৃস্থানীয় কয়েকজন নেতার জবানবন্দিতে বেরিয়ে এসেছে- এমনটাই জানান ডিবি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম।  

এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, হেফাজতকে তারা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। কেননা হেফাজত এমন একটি সংগঠন, যেখানে ডাক দেওয়া মাত্রই হাজার হাজার মাদ্রাসাছাত্র একত্রিত হয় এবং সেক্ষেত্রে তাদের দিয়ে যেকোনো ধরনের নাশকতা কিংবা সহিংসতা তৈরি করানো সহজ। 

রিমান্ডে থাকা হেফাজতের নেতাদের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে। এরপর তদন্তে নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম।