আইন ও অপরাধ

প্রেমিকের অস্বীকৃতি, বিয়ের ব‌্যবস্থা করলো পুলিশ

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে কলেজ শিক্ষকের সঙ্গে প্রেম হয় এক তরুণীর। একসময় ওই তরুণীকে বিয়ে করতে অপারগতা প্রকাশ করেন কলেজ শিক্ষক। পরে পুলিশের প্রচেষ্টায় তাদের বিয়ে হয়েছে।

শুক্রবার (২৮ মে) দুপুরে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এসব তথ‌্য জানানো হয়েছে।

ওই তরুণী পুলিশের মিডিয়া অ‌্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংয়ের ফেসবুক পেজের ইনবক্সে জানান, তার সঙ্গে এক যুবকের বহুদিনের প্রেমের সম্পর্ক। ওই যুবক কলেজ শিক্ষক। বিয়ের আশ্বাসে তারা অনেক গভীরভাবে মিশেছেন। যুবকের ইচ্ছায় তিনি গর্ভপাত করাতেও বাধ্য হয়েছেন। তাদের সম্পর্কের বিষয়টি এলাকার সবাই জেনে গেছে। এখন ছেলেটি তাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। ছেলের পরিবারও তাদের সম্পর্ক মেনে নিতে চাচ্ছে না। এলাকার গণ‌্যমান্য ব‌্যক্তিদের শরণাপন্ন হয়েও সমাধান পাওয়া যায়নি। প্রভাবশালী হওয়ায় ছেলের পরিবার কাউকে পাত্তা দিচ্ছে না। এতে হতাশ হয়ে পড়েন ভুক্তভোগী তরুণী। একপর্যায়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এ সময় একজনের পরামর্শে পুলিশের মিডিয়া অ‌্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংয়ের ফেসবুক পেজের ইনবক্সে বিষয়টি জানান নাগেশ্বরীর ওই তরুণী। 

পুলিশ ওই তরুণীর পাশে থাকার আশ্বাস দেয়। তাকে ইতিবাচক চিন্তা করতে উৎসাহ দেয়। নানাভাবে তাকে কাউন্সেলিং করে।

পরে তরুণী পুলিশকে লিখেন, ‘গত রাতে সুইসাইড নোট লিখেছিলাম। হয়ত রাতেই কিছু করে ফেলতাম। আপনাদের মেসেজ পেয়ে ভরসা পেয়েছি।‘

তদন্ত করে অভিযোগের সত‌্যতা পেলে ওই তরুণীকে আইনি সহায়তা দেওয়ার জন‌্য পুলিশ সদর দপ্তর থেকে নাগেশ্বরী থানার ওসি মো. রওশন কবিরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। সার্কেল এএসপি মো. সুমন রেজাকে বিষয়টি তদারকি করতে বলা হয়।

নাগেশ্বরী থানার ওসির প্রচেষ্টা এবং সার্কেল এএসপির তত্ত্বাবধানে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও গণ‌্যমান্য ব্যক্তিদের উদ্যোগে ও উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশে ওই কলেজ শিক্ষক ও তরুণীর বিয়ে হয়।

বিয়ের পর আবেগাপ্লুত হয়ে ওই তরুণী পুলিশকে লিখেন, ‘মহান আল্লাহর দরবারে শত কোটি শুকরিয়া। আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে। আমরা এখন স্বামী-স্ত্রী। আল্লাহ আমার সাথে কোনো অন্যায় হতে দেননি। এতকিছু সব সম্ভব হয়েছে শুধু আপনাদের (পুলিশ) জন্য।’