আইন ও অপরাধ

অনলাইনে এলএসডি বিক্রি করছে ১৪-১৫টি গ্রুপ

ভয়ঙ্কর মাদক এলএসডি বিক্রির দায়ে পাঁচ তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে এলএসডি, আইস ও গাঁজা জব্দ করা হয়। তাদের কাছ থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশে ১৪-১৫টি গ্রুপ অনলাইনে ভয়ঙ্কর মাদক এলএসডি বিক্রি করছে।

রোববার (৩০ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর পল্টন থানায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. আব্দুল আহাদ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার (২৯ মে) রাতে খিলগাঁও থেকে অবৈধ ভয়ঙ্কর মাদক এলএসডি বিক্রির সময় মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে সাইফ, এস এম মনওয়ার আকিব ওরফে আনান, মো. নাজমুস সাকিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনজনের শরীর তল্লাশি করে এলএসডি ও আইস উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই রাতে ভাটারা থানাধীন বারিধারা চৌধুরী লাউঞ্জে অভিযান চালিয়ে নাজমুল ইসলাম ও বিএম সিরাজুস সালেকিন তপুকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে বনানী থানাধীন মহাখালী টিভি গেট এলাকায় কানিজ ফতেমা বিবির বাড়ির তৃতীয় তলায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ এলএসডি উদ্ধার করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এলএসডি সেবনে মারা যাওয়ার পর পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করে। তদন্তে পাঁচজনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। গ্রেপ্তারের পর তারা স্বীকার করেছে, রাজধানীতে ১৪ থেকে ১৫টি গ্রুপ এলএসডি বিক্রির সঙ্গে জড়িত। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা অনলাইনে নিজস্ব গ্রুপের মাধ্যমে এলএসডি বিক্রি করে। তাদের নির্দিষ্ট গ্রাহকও আছে। অনলাইনে যোগাযোগের মাধ্যমে মাদক পৌঁছে দেওয়া হয়। টাকাও অনলাইনে গ্রহণ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা প্রথমে এলএসডিতে আসক্ত হয়। পরে এ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। তাদের আদালতে হাজির করে রিমান্ডে নিয়ে চক্রের অন‌্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হবে।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিসি আব্দুল আহাদ বলেন, ‘এলএসডি আবিষ্কার করেন সুইজারল্যান্ডের এক বিজ্ঞানী। মাদক ব্যবসায়ীদের নজর পড়ে এ ড্রাগ। তারা এটাকে মাদক হিসেবে বিভিন্ন দেশে বিক্রি শুরু করে। প্রতিটি এলএসডি প্রায় ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। এর ক্রেতা উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানরা। এলএসডি সেবনের পর মানুষের স্বাভাবিক চিন্তা-চেতনা থাকে না। তাকে যেকোনো খারাপ কাজ করতে অনুপ্রাণিত করা যায়, যা যুবসমাজের জন্য মারাত্মক। এলএসডির বিক্রি এবং ব্যবহার যেন না বাড়ে, সেজন্য পুলিশের সঙ্গে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাজ করছে।’

পুলিশ জানিয়েছে, লাইসার্জিক অ্যাসিড ডাই-ইথালামাইড (এলএসডি) ওষুধ প্রকৃতির এক ধরনের এসিড। যা মনস্তাত্ত্বিক প্রভাবকের কাজ করে। এটি সেবন করলে অবাস্তবকে বাস্তব মনে হয়। এটি সাধারণত জিহ্বার নিচে রাখতে হয়। ইঞ্জেকশন আকারেও শরীরে নেওয়া যায়।