আইন ও অপরাধ

মাদক ‘ম্যাজিক মাশরুম’সহ গ্রেপ্তার দুই যুবক

রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে নিষিদ্ধ মাদক ‘ম্যাজিক মাশরুম’ ও বিদেশি মদসহ দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এই মাদক নিয়মিত সেবনের ফলে ব্যক্তি নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে না বলে র‌্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বুধবার (৬ জুলাই)  দুপুরে কারওয়ানবাজার র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান কমান্ডার খন্দকার মঈন আলী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মঙ্গলবার রাতে হাতিরঝিল এলাকা থেকে নাগিব হাসান অর্নব ও তাইফুর রশিদ জাহিনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে মাদক ম্যাজিক মাশরুমের ৫টি বারে ১২০টি স্লাইস এবং ২ বোতল বিদেশী মদ উদ্ধার করা হয়। ম্যাজিক মাশরুম একটি সাইকেলেডিক (হ্যালোসিনোসান) মাদক। এই মাদক বিভিন্ন খাবারে যেমন কেক ও চকলেটে মিশিয়ে সেবন করা হয়। এছাড়াও পাউডার ক্যাপসুল হিসেবেও পাওয়া যায়। এ মাদক ব্যবহারে সেবনকারীর নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। এমনকি কেউ কেউ ছাদ থেকে ঝাঁপিয়েও পড়ার মধ্যেও ‘সুখ’ খুঁজে। এই মাদক নিয়মিত সেবনে শারীরিক ক্ষতি ছাড়াও  মানসিক রোগ যেমন সাইকোসিস ছাড়াও অবিরাম হ্যালুসিনেশনের কারন হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, এ ধরণের অপ্রচলিত ড্রাগের চাহিদা তৈরী হয় মাদক সেবীদের নতুনত্বের প্রতি আগ্রহের মাধ্যমে। গ্রেফতারকৃত  জাহিন প্রথমে গাজা ও মদে আসক্ত ছিল। এরপর সে ২০১৯ সালে ক্রমান্বয়ে এলএসডি, ডিএমটিসহ বিভিন্ন ধরণের সাইকোডলিক ড্রাগ নিয়মিত সেবন ও বিক্রি করা শুরু করে। সাইকোডেলিক ড্রাগ সম্পর্কে তার আগ্রহ সৃষ্টি হলে ইন্টারনেট থেকে সেই সাইকেডেলিক ড্রাগের উপরে অনুসন্ধান শুরু করে। এভাবে সে ম্যাজিক মাশরুম সর্ম্পকে অনলাইনে জানতে পারে। সে বিদেশে অবস্থানরত তার বন্ধু ও পরিচিত জনদের ম্যাজিক মাশরুম বাংলাদেশে নিয়ে আসার অনুরোধ জানায়। কানাডায় তার বাল্যবন্ধু ও গ্রেফতারকৃত অর্নব অধিক মুনাফা লাভের আশায় জাহিনের এই প্রস্তাবে রাজি হয়। ম্যাজিক মাশরুমের বারগুলো বাংলাদেশে বিক্রির ব্যবস্থা করবে। মে  মাসে গ্রেফতারকৃত নাগিব হাসান ম্যাজিক মাশরুমের একটি চালান বাংলাদেশে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে তারা দুজন  ম্যাজিক বারগুলো বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে। অত্যন্ত বিপদজনক এ মাশরুম সেবন করে তাইফুর নিজের প্রতি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং নিজেই নিজের হাতের বিভিন্ন অংশ ধারালো বস্তু দিয়ে কেটে ফেলে।

র‌্যাব জানায়, অর্নব বাংলাদেশে এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। একসময় জাহিন তার সহপাঠি ছিল। অর্নব ২০১৪ সালে কানাডায় যায়। সে কানাডার ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা শেষে কর্মরত ছিল। কানাডা থেকে সে ম্যাজিক মাশরুম নিয়ে আসে এবং বাংলাদেশে চড়া মূল্যে বিক্রি করে।