আইন ও অপরাধ

বিনোদনজগতের আরও কয়েকজন নজরদারিতে

মডেল পিয়াসা ও মৌ, চিত্রনায়িকা পরীমনি এবং চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজকে গ্রেপ্তারের পর অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়ে বিনোদনজগতের আরও কয়েকজনের নাম বেরিয়ে এসেছে। তাদের ওপর নজরদারি শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার প্রধান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন রাইজিংবিডিকে বলেছেন, ‘পরীমনি ও রাজকে আমরা প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তাদের দেওয়া তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। আসামিদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও পাওয়া গেছে।’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, পরীমনির মতো শোবিজ অঙ্গনের আরও ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা এলএসডি, আইসসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক সরবরাহ করছে। পাশাপাশি নিজ বাসায় গভীর রাত পর্যন্ত মাদক সেবনের আসর বসান। এসব আসরে অশ্লীল নৃত্যের সঙ্গে অসামাজিক কার্যকলাপ হয়। সেখানে উচ্চবিত্ত পরিবারের সদস‌্যরা আসেন। পরে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও তুলে তাদের ব্ল্যাকমেইল করা হয়। ভুক্তভোগী অনেকেই ইতোমধ্যে র‌্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন।

বুধবার (৪ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর বনানীর ১২ নম্বর রোডে পরীমনির বাসায় অভিযান চালিয়ে পরীমনিকে আটক করে র‌্যাব। এ সময় ওই বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়। ওই রাতে বনানীর ৭ নম্বর রোডের বাসা থেকে নজরুল ইসলামকে আটক করে র‌্যাব। তার বাসা থেকেও বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দ করা হয়।

এর আগে রোববার (১ আগস্ট) রাতে রাজধানীর বারিধারার বাসা থেকে পিয়াসা এবং মোহাম্মদপুর থেকে মৌকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। দুটি বাসা থেকেই বিপুল পরিমাণ মদ, ইয়াবা, সিসা ও সিসা সেবনের সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

পরের দিন সোমবার (২ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার হারুন-অর-রশিদ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ওই দুজনের (পিয়াসা ও মৌ) ব্যাপারে আমাদের কাছে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য আছে। পাশাপাশি, তথ্য-প্রমাণও আছে।  দুজনের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মদ, ইয়াবা ও সিসা উদ্ধার করা হয়েছে। তারা মূলত রাতের রানি। রাত যত গভীর হয় ততই তাদের কর্মকাণ্ড বাড়ে। দুজনের বাসায় এক প্রকার মিনি বার আছে। বিশেষ করে মোহাম্মদপুর বাবর রোডে মৌয়ের বাসা একটি মিনিবার। এখানে দেশি-বিদেশি সব ধরনের মদ থাকে। পাশাপাশি এখানে বসে ইয়াবা, সিসা সেবন করা যায়। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’

গোয়েন্দা পুলিশের কাছে তথ্য আছে, পিয়াসা ও মৌয়ের নিয়ন্ত্রণে অর্ধশতাধিক সুন্দরী তরুণী আছে। এসব তরুণীকে দিয়ে তারা অর্থশালী ব‌্যক্তিদের টার্গেট করতো। কৌশলে তাদের বাসায় নিয়ে আসতো। মদ খাইয়ে অচেতন করে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি কিংবা ভিডিও ধারণ করতো। পরে ওই ব্যক্তিরা যদি কথামতো কাজ না করতো, তাহলে ভয় দেখানোর পাশাপাশি ছবি বা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হতো। এভাবে অনেকের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে পিয়াসা ও মৌ।