আইন ও অপরাধ

‘কাস্টমারের অর্ডার সরবরাহ করতে হলে তাদের মুক্ত হতে হবে’

তিন লাখ গ্রাহকের অর্ডার সরবরাহ করেছে ইভ্যালি। অন্যান্য গ্রাহকের যে অর্ডার রয়েছে তা অবশ্যই সরবরাহ করবে তারা। এজন্য তো ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের ফ্রি হতে হবে। ফ্রি না হলে কোনো কাস্টমারের অর্ডার তারা সরবরাহ করতে পারবেন না।

শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলামের আদালতে রিমান্ড শুনানিতে এ কথা বলেন রাসেল ও নাসরিনের আইনজীবী এম মনিরুজ্জামান আসাদ।

এদিকে আদালত রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে তাদের দুজনকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ওহিদুল ইসলাম।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন।  তিনি বলেন, গত ২৯ মে ইভ্যালি চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দেয়।  সেই বিজ্ঞাপন দেখে এ মামলার বাদী আরিফ বাকের ৩ লাখ ১০ হাজার ৫৯৭ টাকার পণ্য অর্ডার করেন।  ৭ দিনের মধ্যে তা পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল।  কিন্তু তারা সেটা করেনি।  অনলাইনে ব্যবসার নাম করে তারা মানুষের কাছ থেকে টাকা নেয়।  কিন্তু পণ্য দেয় না।  এ সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে জেনে গেছি। বাদী টাকা চাইলে না দিয়ে তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে টাকার তারা আত্মসাৎ করেন। এ কাজে শুধু এ দুই আসামিরা না, অন্যরাও জড়িত।  তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাবাদ করলে আরও তথ্য বেরিয়ে আসবে।

আসামিদের পক্ষে এম মনিরুজ্জামান আসাদ রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।  তিনি বলেন, ইভ্যালি পণ্যের অর্ডার নেয়।  এরপর তারা পণ্যটি উৎপাদনের জন্য অন্য কোম্পানির কাছে অর্ডার দেয়।  তার নির্দিষ্ট সময়ে অর্ডার কমপ্লিট করতে পারেনি।  এ কারণে ইভ্যালি নির্দিষ্ট সময়ে পণ্য সরবারহ করতে পারেনি। এ মামলার বাদী টাকা চাইতে গেলে আমরা টাকা দেয়নি এটা অস্বীকার করছি না। কিন্তু তারা যে টাকা বা দিবে না এটা তো কখনো বলিনি।  ৩ লাখ  গ্রাহকের অর্ডার তারা সরবরাহ করেছে।  উৎপাদিত কোম্পানি নির্দিষ্ট সময়ে অর্ডার কমপ্লিট করতে পারেনি। এজন্য আমরা পণ্য সরবরাহ করতে পারিনি।

তিনি আরও বলেন, অন্য গ্রাহকের যে অর্ডার রয়েছে তা অবশ্যই সরবরাহ করবো বা পণ্য দিয়ে দিবো। এজন্য তো আমাদের ফ্রি হতে হবে। ফ্রি না হলে কোনো কাস্টমারের অর্ডার তারা সরবরাহ করতে পারবেন না।  তাদের ফ্রি করে দেন। এরপর যদি তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আসে তাহলে তাদের মামলা চলতে পারে।

শামীমা নাসরিনের বাচ্চা রয়েছে। সবকিছু বিবেচনা করে রিমান্ড বাতিল করে জামিন প্রার্থনা করেন এ আইনজীবী। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, তারা পণ্যের জন্য টাকা নিয়েছে।  অথচ ৫ মাসেও পণ্য পৌঁছে দিতে পারেনি।  টাকা ফেরত চাইলে গেলে তা নিয়ে দিয়ে হুমকি দিলো।  এরকম তারা হাজার হাজার গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করেছে।  উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত দুই আসামির তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। যা আগামী ৫ কার্যদিবসে শেষ করতে বলা হয়ছে।

এর আগে এদিন দুপুর ২টার পর তাদের আদালতে নিয়ে আসা হয়। 

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাসেল ও শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় একটি মামলা হয়। আরিফ বাকের নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক মামলাটি দায়ের করেন। এই মামলা হওয়ার পর বিকেলেই রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমাকে আটক করে র‌্যাব।