আইন ও অপরাধ

মাল্টিপারপাসের নামে টাকা আত্মসাৎ: জালালের ১৭ বছর কারাদণ্ড

ধারা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের নামে ৫৯ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় মেজর জেনারেল (অব.) জালাল উদ্দিন আহমেদকে ১৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮ এর বিচারক মো. বদরুল আলম ভুইঞা এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালত জালাল উদ্দিন আহমেদকে মানিলন্ডরিং আইনের একটি ধারায় ১২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। এর পাশাপাশি ৬০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে, যা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আরেক ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। উভয় ধারার সাজা একত্রে চলবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার অপর আসামি খুলনার পাইকগাছা উপজেলার সনাতনকাঠি গ্রামের বাসিন্দা শেখ সামসুর রহমানকে মানিলন্ডারিং আইনের একটি ধারায় ৬ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আসামিরা পলাতক থাকায় গ্রেপ্তার হওয়ার দিন থেকে সাজা কার্যকর হবে বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন বিচারক। এজন্য আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

রায় সম্পর্কে দুদকের প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেছেন, ‘এ মামলায় আমরা দুদকের পক্ষে ৩৭ জনের সাক্ষ্য দিয়েছিলাম। আসামিরা শুরু থেকেই পলাতক ছিলেন। আজ (সোমবার) তাদের অনুপস্থিতেই রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।’

২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পরিবারের সদস্যসহ মেজর জেনারেল (অব.) জালাল উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে বনানী থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম। মামলায় ধারা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের সভাপতি জালাল উদ্দিন আহমেদ, তার স্ত্রী ও সোসাইটির সহ-সভাপতি আলেয়া ফাতেমা, ছেলে ও সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক তালহা আহমেদ এবং মেয়ে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাদিয়া আহমেদকে আসামি করা হয়েছিল। কিন্তু, তদন্তে জালাল উদ্দিন আহমেদের স্ত্রী ও সন্তানদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয় এবং শেখ সামসুর রহমানকে চার্জশিটভুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে আদালত জালাল উদ্দিনের স্ত্রী ও সন্তানদের অব্যাহতি দিয়ে মামলার বিচার শুরু করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, সেনাবাহিনী থেকে ২০০৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর অবসর গ্রহণ করেন জালাল উদ্দিন আহমেদ। পরবর্তী সময়ে তিনি ও তার স্ত্রী আলেয়া ফাতেমা ধারা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে সমবায় ব্যবসা শুরু করেন। এ সময় তিনি গ্রাহকদের আশ্বাস দেন, মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের অনুকূলে এফডিআরের মাধ্যমে টাকা রাখলে কেউ কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।

তিনি ১ হাজার ৪৪৯ জন বিনিয়োগকারীর মোট ৫৯ কোটি ৩৯ লাখ ১ হাজার ৪৫৪ টাকা ওই মাল্টিপারপাসের নামে রশিদের মাধ্যমে জমা নেন। কিন্তুও ওই সোসাইটির ব্যাংক হিসেবে কোনো অর্থ জমা না দিয়ে প্রতারণামূলকভাবে তা আত্মসাৎ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ছেলে ও মেয়ের কাছে ওই অর্থপাচার করেন।