আইন ও অপরাধ

ব্যাংক কর্মকর্তা ও তার পরিবারের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ

টাঙ্গাইল পৌরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আতিকুর রহমান মোর্শেদের বিরুদ্ধে এক নারী ও তার পরিবারের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২ অক্টোবর) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে মৌসুমী মাহমুদা নামে টাঙ্গাইলের এক বাসিন্দা সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছেন। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন মৌসুমী মাহমুদা।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেছেন, ‘২০২১ সালের ১২ জুন টাঙ্গাইল জেলা প্রেস ক্লাবে মোর্শেদের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করি। এর পর ২০২১ সালের ১৯ আগস্ট মোর্শেদকে দুটি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, দুটি ম্যাগজিন ও কয়েক রাউন্ড গুলিসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মোর্শেদের নামে আমি ২০২০ সালে চাঁদাবাজির মামলা করি (মামলা নং-২৮০/২০)। চার্জশিট দাখিল হওয়ায় মামলার চার্জ গঠনের জন্য গত ২০ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল আদালত আদেশ দেন। এই আদেশের পরই সন্ত্রাসীরা পাঁচটি মোটরসাইকেলে আমাদের পিছু নেয়। টাঙ্গাইল স্টেডিয়ামের পাশের পুকুরপাড় রোডে আমাদের রিকশা আটকিয়ে চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি, হেমার, লোহার পাইপ ও তরবারি দিয়ে হামলা চালায়। আমাদের কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে সন্ত্রাসীরা মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করা হলে পুলিশ ডেংগু হৃদয় ও দীপ্ত নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে। এই দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিও দিয়েছে।’

মৌসুমী মাহমুদা বলেন, ‘মোর্শেদসহ সন্ত্রাসীরা আমার জায়গা জোর করে দখল করে নেওয়ার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। তাদের অত্যাচারে জায়গা বিক্রি করে দিতে চাইলেও কেউ ভয়ে কিনতে চাইছে না। এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি ওই সন্ত্রাসীরা আমার টাঙ্গাইলের বাড়িতে গিয়ে হাতুড়ি, দা, রড দিয়ে আমাকে ও মাকে রক্তাক্ত করে। আমার মাথায় ছয়টি সেলাই দিতে হয়। মাকে কুপিয়ে তার হাতের দুটি আঙুল কেটে ফেলে। এ ঘটনায় থানায় মামলা গ্রহণ না করায় আদালতে মামলা করি (মামলা নম্বর-২২২, ১০/০২/২৯২২ ইং)। মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে থাকলেও অজানা কারণে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না। মোর্শেদের একাধিক স্ত্রী থাকলেও সে জোরপূর্বক পিংকি নামের এক নারীকে বিয়ে ও হত্যা করে। পিংকির লাশটাও পাওয়া যায় নি। পিংকির বাবা ২০২১ সালে মোর্শেদসহ ৮ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় আমি ৭ নম্বর সাক্ষী হওয়ায় আমাকে হত্যা করতে চাইছে। তারা যেকোনো সময় আমাকে ও আমার মাকে হত্যা করতে পারে। মোর্শেদের বিরুদ্ধে স্ত্রী হত্যা ছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতা শামীম, মামুন, শফি, তুহিন, রেজা হত্যার অভিযোগে মামলা চলছে।’

মোরশেদ জেলে থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে, টাঙ্গাইন সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সালাম রাইজিংবিডিকে বলেছেন, ‘মোরশেদ খারাপ প্রকৃতির মানুষ। এ কারণেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মৌসুমী ও তার মায়ের ওপর হামলাকারী দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি চার আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।’