আইন ও অপরাধ

‘ভুল করেছি, মাফ করে দিও’ 

চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমু হত্যা মামলায় বাবার বিরুদ্ধে মেয়ে অজিহা আলিম রিদ সাক্ষ্য দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের আদালত রিদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবী তাকে জেরা করেন। তবে এদিন তা শেষ হয়নি। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি অবশিষ্ট জেরা ও পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেন আদালত।

এর আগে এদিন মামলার বাদী শিমুর ভাই হারুন অর রশীদকে জেরা শেষ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।

সাক্ষ্য শেষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সংশ্লিষ্ট আদালতের অ্যাডিশনাল পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ার সরদার জানান, ভিকটিমের মেয়ে অজিহা আলিম রিদ সাক্ষ্য দিয়েছেন। সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে রিদ আদালতে বলেছে, ঘটনার দিন গত বছরের ১৫ জানুয়ারি সে অন্য রুমে ঘুমোচ্ছিল। দুপুর ২টার পর সে জানতে পারে তার নিখোঁজ। সে বলেছে তার বাবার সাথে মায়ের সম্পর্ক ভালো ছিল না। তার বাবা মাকে প্রায় মারধর করতো। সে আরও বলেছে, ঘটনার দুই দিন পর তার বাবা সাখাওয়াত আলী জেলখানা থেকে রিদকে ফোন করে। মেয়েকে বলেন, ‘মা আমি ভুল করেছি। আমাকে মাফ করে দিও।’

শুনানিকালে বাদীপক্ষের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম সুমনও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মেয়ের জবানবন্দি আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে শুনছিলেন সাখাওয়াত আলী নোবেল। অন্য আসামি এস এম ফরহাদও কাঠগড়ায় ছিলেন। এ নিয়ে মামলাটিতে দুই জনের সাক্ষ্য হয়েছে। গত বছর ২৯ নভেম্বর দুই আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।

জানা যায়, গত ১৭ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে স্থানীয়ভাবে সংবাদ পেয়ে কলাতিয়া ফাঁড়ির পুলিশ এবং কেরানীগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ও কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হযরতপুর ইউনিয়ন পরিষদের আলীপুর ব্রিজ থেকে ৩০০ গত উত্তর পাশে পাকা রাস্তা সংলগ্ন ঝোপের ভিতর থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় অজ্ঞাতনামা ৩২ বছর বয়সী এক নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করে। মৃতদেহের পরিচয় শনাক্ত করার জন্য আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হয়। পোস্টমর্টেমের জন্য মৃতদেহটি মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে মৃতদেহের নাম পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়। তদন্তকালে জানা যায়, মৃতদেহটি চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর। দাম্পত্য কলহের জেরে ১৬ জানুয়ারি সকাল আনুমানিক ৭-৮ টার মধ্যে যেকোনো সময় খুন হন শিমু।

শিমুকে হত্যার ঘটনায় তার ভাই হারুনুর রশীদ কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে গত ২৯ আগস্ট কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম দুই জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন।