আইন ও অপরাধ

ডাকাতির পর হত্যা: ১০ জনের ১০ বছর করে কারাদণ্ড

১৫ বছর আগে রাজধানীর গোড়ান এলাকায় ডাকাতি করতে গিয়ে রেজিয়া বেগম (৭৫) নামের নামে এক নারীকে হত্যার দায়ে ১০ জনকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর পাশাপাশি প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৯ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮ বিচারক (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) মো. মঞ্জুরুল হোসেন এ রায় দেন।

দণ্ডিতরা হলেন—জাহাঙ্গীর হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, আলাউদ্দিন, শাহিন সরদার, মতিউর রহমান, আলম, সাইদুল ইসলাম, ইমরান ওরফে এমরান, ইশারত আলী এবং মাইদুল ইসলাম।

রায় ঘোষণার আগে দেলোয়ার হোসেন ও মাইদুল ইসলামকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদেরকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। পলাতক অপর ৮ আসামির বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. সেলিম খান।

২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রাতের খাবার শেষে মা, স্ত্রী, সন্তানসহ ঘুমিয়ে পড়েন সৌদি আরব ফেরত গোলাম কবীর। রাত ৩টা থেকে পৌনে ৪টার দিকে গৃহকর্মী সাবিনা এসে গোলাম কবীরের দরজায় নক করেন। বলেন, ‘নানি অসুস্থ, দরজা খোলেন।’ দরজা খুললেই ৪-৫ জন ডাকাত ঘরে ঢোকে। তারা পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে ৪৭ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে। এসবের দাম ৯ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। প্রায় এক ঘণ্টা পর তারা চলে যায়। 

গোলাম কবীর তার মা রেজিয়া বেগমের রুমে গিয়ে দেখেন, হাত-পা বাঁধা। পরে জানতে পারেন, ডাকাতরা তার মাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে।

এ ঘটনায় গোলাম কবীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১১ সালের ২৮ মার্চ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা খিলগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেন। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করা হয়। বিচার চলাকালে আদালত ২০ সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানি, যুক্তি-তর্ক শেষে আদালত আজ রায় দিলেন।

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী গোলাম কবীর। তিনি বলেছেন, ‘আশা করছি, উচ্চ আদালতে এ রায় বহাল থাকবে।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. আবুল হোসেন এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আশা করছি, উচ্চ আদালতে ন্যায়বিচার পাব। আসামিরা খালাস পাবেন।’