আইন ও অপরাধ

বাংলামেইল-এর সম্পাদকসহ দুজনকে হাইকোর্টে তলব

নিজস্ব প্রতিবেদক : আদালত অবমাননার অভিযোগে অনলাইন পত্রিকা বাংলামেইল-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শাহাদত উল্যাহ খান ও সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।

 

বাংলামেইলে প্রকাশিত ‘সুপ্রিম কোর্টে ঈদ অফার : টাকা দিলেই খালাস’ শীর্ষক সংবাদের জন্য তাদের আগামী ৭ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

 

বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজলের রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের অবকাশকালীন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

 

আদালতে রিটকারী আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল নিজেই শুনানি করেন।

 

রিটের বিবাদীরা হচ্ছেন : তথ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, টেলিযোগাযোগ-সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, পুলিশের আইজি, ডিএমপি কমিশনার, ঢাকা জেলা প্রশাসক, শাহবাগ থানার ওসিসহ ১১ জন।

 

কাজল বলেন, “গত ২৩ জুলাই ‘সুপ্রিম কোর্টে ঈদ অফার : টাকা দিলেই খালাস’ শীর্ষক একটি সংবাদ প্রকাশ করে বাংলামেইল। ওই সংবাদে বলা হয়, বিভিন্ন বিচারপতির নাম ভাঙিয়ে তথাকথিত কিছু দালাল সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে লাখ লাখ টাকার জামিন বাণিজ্য চালাচ্ছেন। এই দালালচক্রের সঙ্গে কিছু অ্যাডভোকেট এবং ব্যারিস্টারও জড়িত বলে অভিযোগ আছে। ঈদের আগে বড় বড় মামলায় জামিন করিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে আসামিদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে মোটা অংকের টাকা। এ অবস্থায় গুঞ্জন উঠেছে, আদালত পাড়ায় জামিনের ঈদ অফার চলছে।”

 

অভিযোগ উঠেছে, ২০০৭ সালের ২৫ অক্টোবর মাদকের দুই মামলায় ৭৯ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি আমিন হুদাকে জামিন করিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে ৫০ লাখ টাকা নেন সুপ্রিম কোর্টের বিএনপিপন্থি আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল। কিন্তু টাকা নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জামিন করাতে ব্যর্থ হন তিনি। এতে বেকায়দায় পড়েন ওই আইনজীবী। জানা গেছে, বিষয়টি নিয়ে আমিন হুদার প্রতিনিধি ও সুপ্রিম কোর্ট বারের নেতাদের মধ্যে দেন-দরবার হয় কয়েকবার। কিন্তু তাতেও সমাধান হয়নি।

 

আরো জানা গেছে, আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল আপিল বিভাগের এক বিচারপতির নাম ভাঙিয়ে জামিন করিয়ে দেওয়ার কথা বলে আমিন হুদার কাছ থেকে ওই টাকা নেন। কিন্তু মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েও আমিন হুদার জামিন হয়নি। এর কয়েক দিন পর সাংবাদিকদের মোবাইলে একটি এসএমএস পাঠানো হয়। এসএমএসে লেখা হয়- ‘Corrupted Barrister ruhul kuddus kajol has taken 50 lak money from drug dealer Amin huda (for bail) to give bribe to the corrected justice of high court. so be alert from nasty Barrister kajol.’ তবে এসএমএসটি কে বা কারা পাঠিয়েছেন তা জানা সম্ভব হয়নি। কারণ ওই নম্বরে ফোন করে তা বন্ধ পাওয়া গেছে।

 

সংবাদটি প্রকাশের পর ২৪ জুলাই রুহুল কুদ্দুস কাজল বাংলামেইল বরাবর লিগ্যাল নোটিশ দেন। কিন্তু নোটিশের জবাব না দেওয়ায় তিনি গতকাল হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার আদালত বাংলামেইলের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মো. সাহাদাত উল্যা খান ও সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারকে তলব করেন।

 

রুহুল কুদ্দুস কাজল আরো বলেন, ‘আদালত বলেছেন সংবাদটির হেডলাইনটিই চরম আদালত অবমানানর শামিল। এতে জনগণের মনে আদালতের বিষয়ে বিরূপ ধারণার জন্ম দেবে।’

 

এ ছাড়া আদালত রুলও জারি করেন। রুলে আদালত অবমাননার অভিযোগে তাদের (সম্পাদক ও রিপোর্টার) বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন।

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ আগস্ট ২০১৪/মেহেদী/সনি/কমল কর্মকার