আইন ও অপরাধ

সিআইডিতে মিনেসোটা প্রটোকলবিষয়ক আন্তর্জাতিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

জাতিসংঘ রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর অফিস ও বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) যৌথ উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী ‘মিনেসোটা প্রটোকল অন দ্য ইনভেস্টিগেশন অফ পটেনশিয়ালি আনলফুল ডেথস’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার ও বৃহস্পতিবার সিআইডি সদর দপ্তরে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তথ্য জানান।

কর্মশালায় আলোচনার মূল বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নীতিমালা অনুযায়ী মৃতদেহ শনাক্তকরণ ডিজাস্টার ভিকটিম আইডেনটিফিকেশন, বিজ্ঞানের ওপর নির্ভরশীল ও নিরপেক্ষ ফরেনসিক রিপোর্ট প্রস্তুতের প্রক্রিয়া, মানবাধিকার সংরক্ষণে পুলিশি তদন্তের নৈতিক ও পেশাগত দিকনির্দেশনা, এবং বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে আলোচিত কেস স্টাডির উপস্থাপন।

কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি ও সিআইডি প্রধান মো. ছিবগাত উল্লাহ বলেন, “সিআইডি আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর ও তথ্যভিত্তিক তদন্ত সংস্থা হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলছে। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকার।”

তিনি আরো বলেন, “মানবাধিকার রক্ষা ও বিচার প্রাপ্তির জন্য সঠিক ও প্রমাণনির্ভর তদন্ত অত্যন্ত প্রয়োজন।”

কর্মশালার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতিসংঘের এক্সট্রা জুডিশিয়াল, সামারি অর আরবিট্রেরি এক্সিকিউশনস বিষয়ক বিশেষ র‌্যপোর্টিয়র মরিস টিদবাল-বিনজ।

তিনি বলেন, “মিনেসোটা প্রটোকল হলো একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নীতিমালা, যা আইনবহির্ভূত মৃত্যুর নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করতে সহায়তা করে এবং বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।”

তিনি তার উপস্থাপনায় লিবিয়া ও ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জে আইন বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের তদন্তের উদাহরণ দিয়ে মিনেসোট প্রটোকলের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে তুলে ধরেন।

বাংলাদেশে ডিএনএ ফরেনসিক চর্চা বিষয়ে উপস্থাপনা করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মমতাজ আরা, পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি জান্নাতুল হাসান এবং সিআইডির ডেপুটি চিফ ডিএনএ অ্যানালিস্ট আহমেদ ফেরদৌস।তারা জুলাই আন্দোলনে সংঘটিত অপরাধের তদন্ত কার্যক্রমের অগ্রগতি, সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জসমূহও তুলে ধরেন।

কর্মশালায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিচার বিভাগ, চিকিৎসা ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ, মানবাধিকার কর্মী ও প্রযুক্তি পেশাজীবীরা অংশগ্রহণ করেন।