লাইফস্টাইল

আগে দর্শনধারী পরে গুণবিচারী

ফজলে আজিম : প্রথম দর্শনে যাকে ভালো লাগে, মন তাকে কাছে পেতে চায়। তার সঙ্গেই প্রেম করার ইচ্ছা জাগে। তবে শুধু প্রেম রোমাঞ্চ নয়, বাস্তব জীবনের অনেক ক্ষেত্রেই এর সত্যতা বোঝা যায়। চাকরির বাজার নিয়েই একবার ভেবে দেখুন, বাস্তবে কী ঘটে! প্রতিদিনই বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইনে চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। নির্ধারিত তারিখ শেষ হওয়ার আগেই অসংখ্য বায়োডাটা জমা পড়ে। নিয়োগকর্তারা অনেক সময় কনফিউজড হয়ে যান কাকে নিয়োগ দেবেন। কারণ যারা চাকরির জন্যে আবেদন করেছে তাদের প্রত্যেকেরই শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অন্যান্য অভিজ্ঞতা রয়েছে। চাকরিপ্রার্থীকে চুড়ান্তভাবে নির্বাচনের আগে ভাইভা বা মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়ে থাকে। ভাইভা বোর্ডকে সন্তুষ্ট করতে না পারার কারণে অনেকের পক্ষে পছন্দের চাকরিতে যোগদান করা সম্ভব হয় না। অনেকে আছেন যারা পরপর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভাইভা দিয়েও চাকরি পাচ্ছেন না। তখন চাকরির বাজার সম্পর্কে এক ধরনের নেতিবাচক ধারণা জন্মে। এবার মূল কথায় আসি। আগে দর্শনধারী পরে গুণবিচারী। নিয়োগকর্তা সবসময় প্রত্যাশা করেন তার প্রতিষ্ঠানে ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন লোক নিয়োগ দেওয়ার। ব্যক্তিত্ব ফুটে ওঠে সময়ানুবর্তীতা, মার্জিত পোশাক, সুবচন, ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি আর আচরণে। শিক্ষাগত যোগ্যতা ও পেশাগত অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোকের অভাব নেই। অভাব রয়েছে ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন প্রার্থীর। এ বিষয়ে কথা হয় গুলশানে অবস্থিত একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা ও অপারেশন অফিসার নাঈম আহমেদের সঙ্গে। তিনি জানান, আগে দর্শনধারী পরে গুণবিচারী। ভাইভা বোর্ডে আসার পর প্রথমেই চাকরিপ্রার্থীর ব্যক্তিত্বের দিকে খেয়াল করা হয়। এরপর তার পেশাগত অভিজ্ঞতা ও অন্যান্য বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। যেমন ধরুন ভাইভা দিতে আসা একজন তরুণের মধ্যে যদি ইও ইও ভাব থাকে। কানে দুল, চুলে স্টাইল, হাতে বালা, ইনফরমাল পোশাকে আসে তবে তা অনেক সময় ভালো চোখে দেখা হয় না। ভাইভায় দেরিতে আসা, ওয়েটিং রুমে কারো সঙ্গে ফোনে অনেক সময় নিয়ে ইনফরমাল কথা বলা, বারবার চুলের স্টাইল ঠিক করা, দাঁত দিয়ে নখ কামড়ানো, চেয়ারে বসে পা দুলানো, টেবিলের ওপর দুই হাত দিয়ে একেবারে ঝুঁকে বসা এমন অনেক বিষয় ভাইভার সময় লক্ষ্য করা হয়। সব প্রতিষ্ঠানই প্রত্যাশা করে উন্নত রুচিবোধ সম্পন্ন কর্মীর। মার্জিত পোশাক, আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব ও হাসিখুশি প্রাণবন্ত স্বভাবের লোকদের সবাই পছন্দ করেন। আর তাই প্রথম দর্শনেই চাকরিপ্রার্থীদের অন্যান্য যোগ্যতার পাশাপাশি এ দিকগুলো দেখা হয়। দর্শনধারী বলতে যে বিষয়গুলো চলে আসে তার মধ্যে একটি হচ্ছে, সুস্বাস্থ্য। এখনকার অনেক তরুণদের মধ্যে এ বিষয়ে অসচেতনতা লক্ষ্য করা যায়। স্বাস্থ্যের বিষয়ে অনেকেই উদাসীন। প্রতিদিনকার খাদ্যাভাস, পরিমিত ঘুম ও ব্যায়ামের প্রভাব সরাসরি প্রথম দর্শনেই চেহারার মাধ্যমে ফুটে ওঠে। আর তাই এসব কিছুর জন্য দরকার ভারসাম্যপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ মে ২০১৭/ফিরোজ