লাইফস্টাইল

ঘুম পাড়ানি খাবার

লাইফস্টাইল ডেস্ক : উষ্ণ গরম পানি দিয়ে গোসল কিংবা নগ্ন হয়ে ঘুমানো- এরকম অনেক কিছুই করা যায় রাতে ভালো ঘুমানোর জন্য। এমনকি আপনার ডায়েট চার্টও আপনার ঘুমের ওপর ভালো প্রভাব ফেলে পারে। আমাদের খাদ্য তালিকায় কেমন খাবার (এবং পানীয়) রাখা উচিত, যা রাতে ভালো ঘুম আনতে সহায়তা করবে- এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজ পোর্টাল ইনসাইডার কথা বলেছে খ্যাতনামা ঘুম বিশেষজ্ঞ এবং ‘দ্য স্লিপ ডক্টর’স ডায়েট প্লান : লুজ ওয়েট থ্রো বেটার স্লিপ’ বইয়ের লেখক ডা. মাইকেল ব্রুয়াসের সঙ্গে। জেনে নিন ২১টি খাবার এবং পানীয়, যা তিনি পরামর্শ দিয়েছেন। গরুর মাংস ডা. ব্রুয়াস ইনসাইডারকে বলেন, গরুর মাংস উচ্চ ট্রাইপটোফান সমৃদ্ধ, এই অ্যামাইনো অ্যাসিড শরীরে স্বাভাবিক মেলাটোনিন তৈরি করে থাকে। মেলাটোনিন হরমোন ঘুম নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে থাকে। এছাড়াও গরুর মাংসে ভিটামিন বি৩ এবং আয়রন রয়েছে, ঘুমের ডাক্তারদের মতে, যা বিশ্রামহীনতা হ্রাস করতে সহায়তা করে থাকে। টুনা টুনা মাছ ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের একটি বড় উৎস, যা ঘুমের চক্র নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে থাকে। স্যামন টুনা মাছের মতো স্যামন মাছও ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের একটি দারুন উৎস, রাতে ভালো ঘুমাতে চাইলে ডিনারের তালিকায় এই মাছ রাখুন। হালিবাট ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ আরেকটি মাছ হচ্ছে, হালিবাট। যা আপনাকে রাতে ভালো ঘুমাতে সাহায্য করতে পারে। মিষ্টি কুমড়া ঘুমের উত্তম খাদ্য হিসেবে মিষ্টি কুমড়া বিশেষ কিছু। ব্রুয়াসের মতে, মিষ্টি কুমড়ায় প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ওমেগা-থ্রি, কপার এবং ক্রোমিয়াম রয়েছে, এসব কিছু ঘুমের উন্নতি করতে পারে। অ্যাসপারাগাস অ্যাসপারাগাস ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ, যা ডিনারের জন্য একটি আদর্শ সহায়ক খাবার। বিটরুট ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামে ভরপুর বিটরুট। ব্রুয়াস বলেন, অনেক মানুষের মধ্যেই এর ঘাটতি রয়েছে। শরীরে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের অপর্যাপ্ততা থাকলে তা অনিয়মিত ঘুম প্যাটার্ন তৈরি করে। আর্টিচোক রাতে ঘুমিয়ে পড়াটা যদি আপনার জন্য কঠিন হয়ে থাকে, তাহলে ডায়েটে আর্টিচোক রাখতে পারেন। এই সবজি আয়রনের ভরপুর, যা অস্থিরতা হ্রাস করতে সহায়তা করে থাকে। সামুদ্রিক শৈবাল খাবার হিসেবে সামুদ্রিক শৈবাল অর্থাৎ সিউইড অনেক দেশেই জনপ্রিয়। ট্রাইপটোফানের খুবই সমৃদ্ধ একটি উৎস সিউইড, যা সারারাত ঘুমাতে সাহায্য করতে পারে। অ্যাভোকাডো রাতে ভালো ঘুমে সাহায্য করতে পারে অ্যাভোকাডো। উচ্চ ভিটামিন বি সমৃদ্ধ এই ফলটি ঘুম নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। পালংশাক পালংশাক বা বকচয় শাকের মতো সবুজ শাক ম্যাগনেশিয়াম ও ভিটামিন বি সমৃদ্ধ, যা ঘুমের উন্নতি সাহায্য করতে পারে। ব্রোকলি ব্রুয়াস বলেন, ব্রোকলি খুবই ভালো একটি সবজি কারণ এটি আপনার শরীর থেকে ক্যাফিন দূর করতে সহায়ক। কাজুবাদাম ঘুমের উন্নতির অনেক সহায়ক উপাদান রয়েছে কাজুবাদামে। ওমেগা-থ্রি, বি ভিটামিন, ম্যাগনেশিয়াম ও ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস কাজুবাদাম। আখরোট খাদ্য তালিকায় আখরোট রাখলে তা আপনার অনেক ভালো ঘুমের জন্য সহায়ক। কেননা আখরোটে ট্রাইপটোফান, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং সেলেনিয়াম রয়েছে। ওটস ওটমিল আপনাকে সুস্থ থাকতে, শক্তি বাড়াতে সাহায্য করতে পারে এবং ব্রুয়াসের মতে, ওটসে কপার রয়েছে ফলে দীর্ঘ ঘুমের জন্য সাহায্য করতে পারে। বাকহুইট পুষ্টির জন্য এটি দারুণ একটি খাদ্যদানা বাকহুইট। কপার ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য হওয়ায় এটি আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা ও ঘুমের জন্য ভালো। দুধ ও দই দুধ ও দইয়ের মধ্যে ট্রাইপটোফান রয়েছে। এই উপাদানটি মেলাটোনিন হরমোন তৈরি করে ঘুমে সহায়তা করে। কলা কলায় প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে। ব্রুয়াস বলেন, ঘুমের পর্যায়কে ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণের জন্য এটি আদর্শ একটি খাবার। টার্ট চেরি যেকোনো ফলের তুলনায় শরীরে সবচেয়ে বেশি মেলাটোনিন হরমোন উৎপন্ন করে টার্ট চেরি। তাই ঘুমাতে যাওয়ার টার্ট চেরির রস খেয়ে ঘুমাতে যাওয়া সহজেই ঘুমিয়ে পড়ার সবচেয়ে সহজ উপায়। কিউই ব্রুয়াস বলেন, কিউই ফল শরীরে সেরোটোনিনের উন্নতিতে সাহায্য করে। কিউই ফল খেলে প্রচুর পরিমানে ট্রিপটোফ্যান আমাদের শরীরে আসে ও তা সেরোটোনিন তৈরি করে এবং মানসিক প্রশান্তির অনুভূতি জোগায়। ভেষজ চা ঘুমানোর আগে ভেষজ চা পান শরীর শিথিলে সাহায্য করতে পারে। ব্রুয়াস বলেন, বিশেষ করে ল্যাভেন্ডার বা ক্যামোমিলের চা পান শরীর সবচেয়ে বেশি প্রশান্ত করে। তথ্যসূত্র : ইনসাইডার

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ জুন ২০১৭/ফিরোজ