লাইফস্টাইল

রোজায় সুস্থতা ধরে রাখতে...

এস এম গল্প ইকবাল : রোজা পালনের জন্য সঠিক খাবার নির্বাচন এবং জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন না আনলে অসুস্থ হওয়া কিংবা ইবাদাতে বিঘ্ন ঘটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এ প্রতিবেদনে রোজায় সুস্থতা ধরে রাখতে কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো। * রোজা পালন শেষে ইফতারে ২-৩টি খেজুর খাওয়াই যথেষ্ট। মনে রাখবেন যে খেজুরে প্রচুর ক্যালরিও থাকে। তাই রমজানে ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পরিমিত পরিমাণে খেজুর খাওয়াই ভালো। * রমজানের দিনগুলোতে স্বাস্থ্যের অবনতি প্রতিরোধে খাবারে লবণের ব্যবহার সীমিত করুন। খাবারকে সুস্বাদু ও বর্ণালী করতে শাকসবজি, খাবারে স্বাদ আনে এমন উদ্ভিদ ও মসলা যোগ করুন। * নিশ্চিত হোন যে আপনার স্যূপে বেশি পরিমাণে ব্রকলি, পালংশাক, মটরশুটি, গ্রিন বিনস, লাউ ও গাজরের মতো শাকসবজি রয়েছে। এসবকিছু আপনার স্যূপে ভিটামিন ও খনিজ যোগ করে, সেই সঙ্গে আঁশও- যা সুস্থ পরিপাকতন্ত্রের জন্য প্রয়োজন। * সালাদে সৃজনশীল মানসিকতার পরিচয় দিন। আপনি সালাদে যত বেশি বৈচিত্র্যময় ও বর্ণালী শাকসবজি যোগ করবেন, তত বেশি পুষ্টি ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট পাবেন। এসবকিছু আপনার শরীরের কোষকে সুরক্ষা দেয় এবং পাপমোচনের এ মাসে সমগ্র স্বাস্থ্যের উন্নয়ন করে। * আপনার প্রধান কোর্সকে তিনভাগে বিভক্ত করুন। প্লেটের এক-চতুর্থাংশে জটিল কার্বোহাইড্রেট, এক-চতুর্থাংশে চর্বিহীন মাংস বা মাংসের বিকল্প এবং প্লেটের অর্ধেকে শাকসবজি রাখুন। এটি নিশ্চিত করবে যে আপনি ভারসাম্যপূর্ণ স্বাস্থ্যকর খাবার খাচ্ছেন। * যদি খুব দ্রুত পেট ভরে যায় ও ইফতার শেষ করতে না পারেন, তাহলে প্রধান কোর্স মাগরিবের প্রার্থনার পর খেতে পারেন। এসময়টাতে ইতোমধ্যে ভোজনকৃত খেজুর, স্যূপ ও সালাদ হজম হয়ে যাবে। এর ফলে আপনি অস্বস্তি অনুভব করবেন না। * সমুচার মতো ডিপ ফ্রাইড খাবার সীমিত করুন, কারণ এসব খাবারে উচ্চমাত্রার ক্যালরি ও ফ্যাট থাকে, যা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে। বাইরের সমুচার খাওয়ার পরিবর্তে ঘরে সমুচা বেকিং করার চেষ্টা করুন, বিশেষ করে চিজ সমুচা। * বাজারে প্রাপ্ত রমজানের বিশেষ ফ্রুট জুস সীমিত করুন, কারণ এগুলোতে চিনি ও কিছু ভিটামিনের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে ক্যালরিও রয়েছে। আপনার তৃষ্ণা নিবারণ করতে বেশি করে পানি পান করুন। * যদি আপনি কফি পানকারী হয়ে থাকেন, তাহলে এ সাধনার মাসে কফি পানের অভ্যাস ছাড়ার চেষ্টা করুন, কারণ কফি পানে মাথাব্যথা ও ঘুমঘুম ভাব আসে, যা প্রার্থনার অন্তরায় হতে পারে। যদি আপনি কফি পান করতেই চান, তাহলে ভারসাম্যপূর্ণ ইফতারের এক থেকে দুই ঘণ্টা পর এক কাপ পান করতে পারেন। * যদি আপনি রমজান মাসে ক্যালরি গ্রহণ নিয়ন্ত্রণ করতে চান, তাহলে উচ্চ ক্যালরির খাবার সীমিত করতে হবে, বিশেষ করে মিষ্টান্ন। * যদি আপনি অ্যাথলেট হন এবং নিয়মিত মডারেট থেকে ভিগোরাস এক্সারসাইজ করেন, তাহলে রমজান মাসে ইফতারের ঠিক পূর্বে আপনার এক্সারসাইজ সেশন সমন্বয় করুন এবং সেশনের পর অবিলম্বে পানি পান করুন। তরল ও পুষ্টি দ্বারা শরীরকে পুনরুজ্জীবিত করতে ধীরে ধীরে খান। * আপনি কম চর্বির দুগ্ধজাত প্রোডাক্ট (যেমন- কম চর্বির দুধ ও ক্রিম), সীমিত তেল ও সীমিত চিনি ব্যবহার করে ঘরে নিম্ন ক্যালরির মিষ্টি খাবার তৈরি করতে পারেন। * নিশ্চিত হোন যে আপনার প্রতিবারের খাবারে জটিল কার্বোহাইড্রেট রয়েছে (যেমন- ভাত, আলু ও বুরগুল), যা শরীরে ধীরে শোষিত হয়। এর ফলে ৪-৫ ঘণ্টা ধরে রক্তপ্রবাহে গ্লুকোজের মাত্রা স্থির থাকে। * মাংস, বিভিন্ন ধরনের ডাল, ডিম ও দুগ্ধজাত খাবার হলো প্রোটিনের ভালো উৎস। নিশ্চিত হোন যে আপনার প্রতিবারের খাবারে যেন এ উৎসগুলোর অন্তত একটি থাকে, কারণ শরীরের কোষের জন্য প্রোটিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। এসব খাবার তৃপ্তির মাত্রাও বৃদ্ধি করে, যা মিষ্টান্ন খাওয়ার প্রবণতা কমায়। * রমজান মাসে রুটিনের পরিবর্তনে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। এটি এড়াতে আপনার ডায়েটে আঁশসমৃদ্ধ খাবার রাখুন, যেমন- শাকসবজি, ফল, হোল গ্রেন ও বিভিন্ন ধরনের ডাল। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন ও সক্রিয় থাকুন। * লবণাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন, যেমন- ক্যানের খাবার বা প্রক্রিয়াজাত খাবার, সল্টেড নাট ও আচার।কারণ এসবকিছু রোজার সময়টাতে আপনার পিপাসা বাড়াবে। রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ মে ২০১৯/ফিরোজ