লাইফস্টাইল

ভাতের ক্যালোরি কমানোর উপায়

একজন সফল রাঁধুনিকে রান্না সম্পর্কে মতামত দিতে বললে তিনি বলবেন, খাদ্য ও রান্না হলো- রসায়ন। যেখানে পিএইচ এর মাত্রার মান নির্ধারণ, এনজাইম ও তাপমাত্রার কারবার করা হয়।

আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি এ সম্পর্কিত তিনটি দারুন টিপস প্রকাশ করেছে এবং বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখাও জানিয়েছে।

ভাতে ক্যালোরির পরিমাণ কমানো

ভাত বিশ্বের অনেক দেশে প্রধানতম খাবার। কিন্তু ভাতে থাকা স্টার্চ (অনমনীয়) ক্যালোরি আপনার জন্য ভালো নাও হতে পারে। মাত্র এককাপ রান্না করা ভাতে থাকে ২৪০ ক্যালরি। যা সহজে ক্ষয়প্রাপ্ত না হয়ে আপনার শরীরে মেদ হিসেবে জমা থাকতে পারে।

কিন্তু গবেষকরা জানিয়েছেন, একটি সাধারণ পদ্ধতি ব্যবহার করে ভাতের স্টার্চকে ভেঙে গ্লুকোজে পরিণত করা যায়।

এজন্য প্রথমে আপনাকে নারকেল তেল ফুটন্ত পানিতে যোগ করতে হবে। যা মোট ভাতের পরিমাপের ৩ শতাংশ বা আধা কাপ ভাতের জন্য এক চা-চামচ নারিকেল তেল। তারপর চালগুলোকে ফুটন্ত গরম পানিতে দিয়ে দিতে হবে এবং যখন ভাত হয়ে যাবে তখন তা চুলা থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা করে ১২ ঘণ্টার জন্য রেফ্রিজারেটরে রেখে দিতে হবে।

ভাত পরিবেশন করার আগে মাইক্রোওয়েভ ওভেনে গরম করে নিলেই হবে। এতে আপনার ভাত থেকে ৫০ থেকে ৬০ ভাগ ক্যালরি কমে যাবে।

যেভাবে এটি কাজ করে: ভাতে রয়েছে বিভিন্ন রকমের পাচ্য ও অপাচ্য স্টার্চ। পাচ্য স্টার্চগুলো খুব সহজেই ভেঙে গ্লুকোজে পরিণত হয়ে যায় এবং সহজে তা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। আর অব্যবহৃত থাকলে তা ফ্যাট আকারে জমা হয়। কিন্তু অপাচ্য স্টার্চগুলো সহজে ভাঙতে চায় না। নারকেল তেল স্টার্চের কাঠামো পরিবর্তনে অণুর সঙ্গে কাজ করে। ভাত ১২ ঘণ্টা ঠাণ্ডা করায় অ্যামোলেস নামক একটি স্টার্চ উপাদানের মধ্যে হাইড্রোজেন বন্ধন তৈরি হয়, যা পাচ্য রূপান্তরিত হয়।

কাটা আপেলকে বাদামি হওয়া থেকে রক্ষা

লেবুর রস কাটা আপেলের টুকরাগুলোকে বাদামি হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। কৌশলটা হলো, একটি ছোট পাত্রে পানি নিয়ে পুরো একটি লেবুর রস চিপে নিন। সেই পানিতে কাটা আপেল বা অন্য কোনো ফলের টুকরো একবার ডুবিয়ে নিয়ে জিপলক ব্যাগে ভরে ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করতে পারেন।

এতে করে ভিটামিন সি এর কারণে পলিফেনল অক্সাইড বা ‘ব্রাউনিং এনজাইম’ কার্যকর থাকে না। সেকারণে ফলের টুকরার ওপর বাদামি দাগ পড়ে না।

মুরগির টসটসে মাংস পেতে বেকিং সোডা

আপনি যদি মুরগি বা অন্যান্য মাংস মেরিনেট করার পর্যাপ্ত সময় না পান তাহলে এর সঙ্গে কিছুটা বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন। তারপর তা ১৫ মিনিট রাখুন। এরপর বেকিং সোডা পানি দিয়ে পরিষ্কার করে পছন্দমতো রান্না করে ফেলুন।

মাংস ধীরে ধীরে তার পিএইচ লেভেল হারাতে থাকে। ফলে মাংসের স্বাদের তারতম্য ঘটে। পিএইচ মাত্রা কমে গেলে মাংস শক্ত হয়ে যায়। কিন্তু বেকিং সোডার পিএইচ মাত্রা ৯। তাই কিছুক্ষণের জন্য মাংস বেকিং সোডা দিয়ে মাখিয়ে রাখলে মাংসের পিএইচের মাত্রা বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ মূলত মাংসের পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাই আপনি এরপর যখন নরম তুলতুলে মাংস খেতে চাইবেন বেকিং সোডার এই বৈজ্ঞানিক টিপসটি মাথায় রাখতে পারেন।

তথ্যসূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট