মার্চ স্পেশাল

বসন্ত বাতাসে পরাগরেণু অ্যালার্জি

ডা. সজল আশফাক :   চলে গেল শীত। আজ থেকে শুরু হলো বসন্ত। বসন্ত বাতাস সাথে করে নিয়ে এসেছে পরাগরেণুর সমারোহ।

 

বসন্ত মানেই গাছে গাছে পরাগরেণু। এই সময়ে ফুল ছাড়াও বিভিন্ন গাছে ফুলের পরাগায়ন হতে শুরু করে। এই পরাগায়ন প্রকৃতিকে ফুলে ফলে সাজিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে হলেও অনেকের ক্ষেত্রেই তা অস্বস্তি বয়ে আনতে পারে। এর অন্যতম কারণ ফুল, বিভিন্ন গাছ, ঘাস এবং আগাছা ধরণের গাছ থেকে বাতাসে উড়ে বেড়ানো পোলেন, যা বাংলায় পরাগরেণু হিসাবে পরিচিত। এটি অ্যালার্জিরও কারণ হতে পারে।

 

বসন্তে একদিকে যেমন বাতাসে পরাগরেণু উড়ে বেড়ায়, অন্যদিকে শীতের শুষ্ক আবহাওয়াও প্রায় বহাল থাকে। এই দুইয়ে মিলে বসন্তের বাতাস যতই মৃদুমন্দ হোক না কেনো, তা অনেকের নাকেই অস্বস্তির সৃষ্টি করে থাকে।  বিশেষ করে যারা আগে থেকেই অ্যালার্জিপ্রবণ। এছাড়া পরাগরেণু ও ধূলোবালির প্রতি অতি সংবেদনশীল।

 

চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় পোলেন বা পরাগরেণুজনিত এই অ্যালার্জি, পোলেন অ্যালার্জি, স্প্রিং অ্যালার্জি  ইত্যাদি নামে পরিচিত। এ ধরণের অ্যালার্জির উদ্রেককারী বস্তুটি যেহেতু বাতাসে ভেসে বেড়ায় তাই এটি প্রথম আক্রমণ করে নাকের ঝিল্লিকে।

 

নাকের ঝিল্লি পরাগরেণুর উপস্থিতিকে শরীরের কাছে বন্ধু বলে মনে হলেই শুরু হয়ে যায় হাঁচি। যার পরিণাম নাকবন্ধ হওয়া, নাক দিয়ে তরল পানি ঝরা। কখনো কখনো কারো কারো ক্ষেত্রে হাঁচি, সর্দি তীব্র আকার ধারণ করে থাকে। শরীরে কিছুটা জ্বর বোধ হয়। চোখ লাল হয়ে চুলকাতে থাকে। এই অবস্থাকে বলা হয় হে-ফিভার। শুধু যে নাক-চোখ চুলকায় তা নয়, অনেকের ত্বকও চুলকাতে থাকে এই কারণে।

 

তবে অবস্থা যাই হোক, এন্টি অ্যালার্জিক ওষুধ খেয়ে নিলে এবং নাকে বিশেষজ্ঞের পরামর্শমত স্টেরয়েড জাতীয় স্প্রে ব্যবহার করলেই অবস্থার অনেকটাই উন্নতি ঘটে। তাছাড়া উপসর্গ অনুযায়ী নাকে গরম পানির বাষ্প টানলেও উপকার হয়।

 

তবে প্রতিরোধের জন্য এ সময়ে মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে শরীরের প্রতিরক্ষা শক্তিকে বাড়ানোর জন্য ইমিউনোথেরাপি নেওয়া যেতে পারে। ইমিউনোথেরাপি হিসাবে বিভিন্ন ইনজেকশন আছে, যেগুলো একবছর কার্যকর থাকে।

 

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, নাক কান গলা বিভাগ, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

     

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/সাইফ/নওশের