মার্চ স্পেশাল

শারীরিক উচ্চতা বাড়াবে হস্তপদাসন

ফজলে আজিম : খেলাধূলা বা শরীর চর্চার অভাবে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দিন দিন কমে যাচ্ছে, স্থুলতাও বাড়ছে আশংকাজনক হারে। নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য প্রতিদিন মাত্র ১০-১৫ মিনিট সময় বের করে নিন। শুরু করে দিন ঘরে বসেই শরীর চর্চা।

 

ঘরে বসে করার মতো কিছু ব্যায়াম নিয়ে আমাদের ধারাবাহিক বিশেষ আয়োজন ‘ইয়োগা ও বজ্রপ্রাণ’। আজ থাকছে সন্ধিআসন বা হস্তপদাসন।

 

যেভাবে করবেন:

প্রথমে মেরুদন্ড সোজা রেখে দুপায়ের মধ্যে ৪/৫ আঙুল পরিমাণ ফাঁক করে দাঁড়ান। এবার হাত দুটো মাথার ওপরে সোজা করে তুলুন। হাত ওপরে তোলার সময় বুকভরে দম নিন (দুই কানের সঙ্গে হাতদুটো লেগে থাকবে। হাতের তালু সামনের দিকে থাকবে)।

 

এবার দম ছাড়তে ছাড়তে ধীরে ধীরে শরীরের ওপরের অংশ সামনের দিকে নামাতে থাকুন। মাথা নুইয়ে মুখ হাঁটুর কাছে নিয়ে এসে কপাল হাঁটুর সঙ্গে লাগিয়ে রাখুন। এবার দুহাত দিয়ে দুপায়ের গোড়ালির একটু ওপরে ধরুন অথবা দুই হাতের তালু মাটিতে রাখুন।

 

খেয়াল রাখুন যাতে হাঁটু ভেঙে না যায়। হাঁটু সোজা করে রাখতে হবে এবং পেট ও বুক উরুর সঙ্গে লেগে থাকবে।

 

শ্বাস-প্রশ্বাস থাকবে স্বাভাবিক। এভাবে কয়েক সেকেন্ড থাকুন (নিয়মিত চর্চা করলে ১০ থেকে ২০ সেকেন্ড এভাবে থাকতে পারবেন)।

 

তারপর ধীরে ধীরে শরীরকে আগের অবস্থায় নিয়ে আসুন। এভাবে পাঁচবার করতে পারেন। এ আসনটি আপনি বসেও করতে পারেন।

 

মনে রাখতে হবে, যোগ ব্যায়াম ও বজ্রপ্রাণ অনুশীলনের সময় প্রথম দিকে শরীর সঠিক ভঙ্গিমায় না-ও আসতে পারে। আর তাই জোর করে শরীরকে

 

সঠিক ভঙ্গিমায় নিতে যাবেন না। এতে উপকারের চেয়ে ক্ষতি হতে পারে। তাই ধীরে ধীরে সঠিক ভঙ্গিমায় আসুন। স্থুলাকায় লোকদের প্রথমে এ আসন চর্চা অসুবিধা হলেও নিয়মিত চর্চা করলে তা একসময় সহজ হয়ে যাবে। প্রত্যেক ব্যায়ামের পর কিছু সময় বিশ্রাম নিন।

   

উপকারিতা

* এ আসন চর্চা করলে হাত ও পায়ের স্নায়ুমন্ডলী সুস্থ ও সচল থাকে।

 

* হস্তপদাসনে মেরুদন্ড সহজ ও নমনীয় থাকে। দেহের অসমতা দূর হয়।

 

* নিয়মিত অভ্যাসে পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য, অজীর্ণ রোগ হতে পারে না।

 

* পেটে চর্বি জমতে পারে না। অপ্রয়োজনীয় চর্বি কমিয়ে দেহকে সুন্দর করে তোলে।

 

* নিয়মিত সন্ধিআসন বা হস্তপদাসন অভ্যাসে পেটের অভ্যন্তরীণ অঙ্গসমূহ- যথা পাকস্থলী, যকৃৎ, প্লীহা ও হজমের নাড়িতে সংকোচন ও প্রসারণ হওয়ায় তাদের ক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করতে সাহায্য করে।

 

* পাচনতন্ত্র, মূত্র্রাশয় ও প্যানক্রিয়াসের ওপর সরাসরি সংকোচ ও প্রসারণ হওয়ায় কোষ্ঠবদ্ধতা ও ডায়াবেটিস দূর হতে সাহায্য করে।

 

* যারা নিম্ন রক্তচাপে ভুগছেন তারা এ আসনটি করলে উপকার পাবেন।

 

* নিয়মিত এ আসন চর্চা করলে মেরুদণ্ডের নমনীয়তা বাড়ে ও উচ্চতা বাড়াতেও এ আসনটি বেশ কার্যকর। ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত ছেলে-মেয়েরা এ ব্যায়াম করে উচ্চতার ব্যাপারে বেশি উপকৃত হবেন।

 

বি.দ্র.: যাদের উচ্চ রক্তচাপ ও চোখে গুরুতর সমস্যা রয়েছে তারা এ আসনটি করবেন না। শরীরের বিশেষ কোনো সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যায়াম করা উচিত।

 

লেখক: প্রশিক্ষক, ইয়োগা ও বজ্রপ্রাণ, বাংলাদেশ ব্যুত্থান ফেডারেশন।

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ আগস্ট ২০১৬/ফিরোজ