মিডিয়া

সাগর-রুনি হত্যায় স্বপ্রণোদিত রুল চান সাংবাদিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড বিষয়ে ৫৪ বার তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার মেয়াদ বাড়ানোয় প্রশাসনের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে আদালতকে স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করার অনুরোধ জানিয়েছেন সাংবাদিকরা। রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সামনে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে আদালতকে এমন উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ করেন তারা। সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ডিআরইউর সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, কেন ৬ বছরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই হত্যার রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয়েছে? অন্য কোনো কারণ আছে কি? আমরা জানতে চাই। কেন তারা বার বার ব্যর্থ হচ্ছে? বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে এবং ডিআরইউ ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করবে বলে জানান তিনি। সাইফুল ইসলাম বলেন, চাঞ্চল্যকর এই হত্যার কোনো ক্লু বের হচ্ছে না, এ থেকে প্রমাণ হয় প্রশাসন ব্যর্থ। সমাবেশে ডিআরইউর প্রাক্তন সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা বলেন, খুনিরা ধরা না পড়া পর্যন্ত এই আন্দোলন থেকে ডিআরইউ সরে আসবে না। খুনি ধরা না পড়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

 

ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক শুক্কুর আলী শুভ বলেন, আমাদের বিশ্বাস, এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দেবে, এটা আমাদের বিশ্বাস। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, আমরা এই হত্যার বিচারের দাবিতে কোনো কমিটি কিংবা কোনো ক্যাম্পিং করি নাই। নেতারা এক হতে বলেন, কিন্তু তারাই তা মানেন না। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী বছর শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, সাগর-রুনি দম্পতির ছেলে মেঘকে এখানে দাঁড় করিয়ে যেন বলতে পারি, বিচার হয়েছে। ডিআরইউর প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, এই দিন হলো সাংবাদিকদের নিরাপত্তাহীনতার দিন। সমাবেশ শেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি নিয়ে যান সাংবাদিকরা। স্মারকলিপিতে উল্লেখ রয়েছে, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহরুন রুনি। দেখতে দেখতে ৬ বছর হয়ে গেল, কিন্তু এখনো সাংবাদিক দম্পতি সাগর ও রুনির খুনিদের শনাক্ত করা যায়নি। এ ঘটনায় বিভিন্ন সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে খুনিদের শনাক্ত করার জোর উদ্যোগের কথা জানানো হলেও কার্যত অগ্রগতি বলতে কিছুই নেই। ঘটনার শুরু থেকে শেরেবাংলা নগর থানা, সিআইডি ও ঢাকা মহানগর গয়েন্দা পুলিশ মামলার তদন্ত করেছে। বর্তমানে মামলাটি র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) তদন্তাধীন। র‌্যাব এ পর্যন্ত ৫৩ বার সময় নিয়েও মামলার অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে পারেনি। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন এখন জামিনে রয়েছে। সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- ডিআরইউর প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, মোরসালীন নোমানি, ইলিয়াস হোসেন, প্রসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান প্রমুখ। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/নূর/রফিক