মিডিয়া

সরকারি ও দাতা সংস্থার কাছে সহযোগীতার দাবি মেয়রদের

কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রভাবে দেশের পৌরসভা এলাকার দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থান সংকুচিত হয়েছে। পর্যাপ্ত সহযোগিতার অভাবে এ শ্রেণির মানুষেরা খেয়ে না খেয়ে মানবেতরভাবে দিনাতিপাত করছেন। তারা এসব মানুষের পাশে দাঁড়াতে সরকার ও দাতা সংস্থাগুলোর প্রতি আহবান জানিয়েছেন মিউনিসিপ্যাল এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ম্যাব)।

সোমবার রাজধানীতে মিউনিসিপ্যাল এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ম্যাব) আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এদাবি জানানো হয়।

করোনা পরিস্থিতিতে শহর এলাকার দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থান বিষয়ক এক ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয় । এ ওয়েবিনারের সহ-আয়োজক হিসেবে ছিল, নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম, বাংলাদেশ (ইউডিজেএফবি )। 

পৌর মেয়ররা বলেন, কোভিড-১৯ কারণে বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশও কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যথাসাধ্য চেষ্টা করে চলেছে। নানান সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও দেশের পৌরসভাগুলো পরিস্থিতি মোকাবেলায় চেষ্টা চালিয়েছে। সরকারি, বেসরকারি, এনজিও এবং দাতাসংস্থাগুলোর অর্থায়ন ও পৌরসভাগুলোর নিজস্ব অর্থায়নে এ মহামারির প্রভাব প্রতিরোধের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তারা আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় পৌর মেয়ররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও সেভাবে প্রচার হচ্ছে না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করলেও সেভাবে মূল্যায়িত না হওয়ায় কষ্ট পান তারা। তাদের কাজের সঠিক মূল্যায়ন করতে সাংবাদিক সমাজের প্রতিও দাবি রাখেন তারা। 

ওয়েবিনারে সভাপতির বক্তৃতায় ম্যাপ সভাপতি ও নীলফামারি পৌরসভার মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ বলেন, করোনা মোকাবেলায় দেশের পৌরসভার মেয়ররা অনেক কাজ করেছেন। দেশে যখন করোনা আক্রান্ত শুরু হয়, তখন সরকারি নির্দেশনায় পৌরসভাগুলো জনসচেতনতায় মাইকিং, লিফলেট বিতরণ, জনসাধারণের চলাচলে নিয়ন্ত্রণসহ সব ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এরপর সরকারের লকডাউন ঘোষণার পর, কেউ যেন না খেয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এসন ঘোষণার পর পৌর মেয়ররা নিজের জীবন বাজি রেখে জনসাধারণকে সার্বিক সহায়তা দিয়েছেন। 

তিনি আরও বলেন, তবে ঐ সময় পৌরসভার আয় কমে গেছে। পৌর নাগরিকরা কর দেয়নি, বাজার থেকে রাজস্ব আসেনি। তারপরও পৌর কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বেতন বন্ধ হয়নি। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় পৌর মেয়ররা আরো ভালো কাজ করতে পারবে, যদি সরকারি-বেসরকারি ও এনজিওসহ দাতাসংস্থাগুলো পৌর মেয়রদের প্রণোদনা দিয়ে সহযোগিতা করে। 

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ম্যাবে’র সাধারণ সম্পাদক ও শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম কোতোয়াল বলেন, করোনা মহামারি মোকাবেলায় সরকার নানা প্রদক্ষেপ নিয়েছে। যদিও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে নানা নির্দেশনা দিয়েছে। এরমধ্যে ওয়াজ মাহফিল না করা, কোনরকম জনসমাগম না হওয়া। কিন্তু ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনার  স্খানীয় সরকার নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে। একদিকে জনসমাগম না করতে নিষেধ অন্যদিকে নির্বাচনের অনুমতি। দুইটা বিষয় একসঙ্গে সামঞ্জস্য হচ্ছে না। নির্বাচন কয়েক মাস পিছিয়ে দিলেও সমস্যা নেই। 

গোপালগঞ্জ পৌর মেয়র লিয়াকত আলী বলেন, গোপালগঞ্জ পৌরসভার করোনাভাইরাসের আক্রান্ত বেশি ছিল। এর নানাবিধ কারণ ছিল। এসব কারণ মোকাবেলা করে করোনা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছি, সফলও হয়েছি। তবে সফল হওয়ার পেছনে সরকারি-বেসরকারি ও এনজিও সংস্থাগুলোর সহায়তা ছিল।

দৈনিক সমকালের বিশেষ প্রতিনিধি অমিতোষ পালের সঞ্চালনায় বক্তৃতা করেন, সোনাইমুড়ী পৌরসভার মেয়র মোতাহের হোসেন, ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু, মাদারীপুর পৌরসভার মেয়র খালিদ হোসেন, কুড়ীগ্রামের উলিপুর পৌরসভার মেয়র তারিক আবুল আলা, বগুড়া পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট একেএম মাহবুবুর রহমান, ইউডিজেএফবি’র সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের সিনিয়র রিপোর্টার মতিন আব্দুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা ট্রিবিউনের সিনিয়র রিপোর্টার সোহেল মামুন প্রমুখ।