ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্যদের জন্য সাংবাদিকতায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের সম্ভাবনা, ঝুঁকি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয়ে দুই দিনের একটি কর্মশালা শুরু হয়েছে।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে ডিআরইউয়ের শফিকুল কবির মিলনায়তনে এই কর্মশালার উদ্বোধন করা হয়।
তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গেমপ্লিফ্লাইএর পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত ‘এআই পাওয়ার্ড জার্নালিজম’ শীর্ষক এই কর্মশালায় অংশ নিচ্ছেন ডিআরইউর ৬০ জন সদস্য।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল বলেন, “প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে সাংবাদিকদের প্রস্তুত করতেই এই ব্যতিক্রমধর্মী প্রশিক্ষণের আয়োজন। কোন কনটেন্ট এআই দ্বারা তৈরি আর কোনটি নয়—তা যাচাই করার সক্ষমতা এখন সাংবাদিকদের জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।”
তিনি বলেন, “এআই কীভাবে কাজ করে এবং এর সীমাবদ্ধতা কী-সেটি জানা না থাকলে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা সম্ভব নয়। এ ধরনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমরা নতুন কিছু শিখতে পারব।”
তিনি বলেন, “এআই সাংবাদিকের বিকল্প নয় বরং শক্তি বাড়ানোর হাতিয়ার।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে দেওয়া স্বাগত বক্তব্যে গেমপ্লিফ্লাই এক্সওয়াইজেডের গেমপ্লিফাইয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, “আজ আপনারা এমন এক সময় সাংবাদিকতা করছেন, যখন খবরের গতি আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে দ্রুত, কিন্তু একই সাথে ভুল তথ্যের বিস্তারও আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে ভয়ঙ্কর। এ বাস্তবতায় এআই আপনাদের জন্য একদিকে বিশাল সুযোগ, আবার অন্যদিকে বড় ঝুঁকি।”
“একটি বিষয় আমি খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, এআই কখনোই সাংবাদিকদের বিকল্প নয়, এটি সাংবাদিকের শক্তি বাড়ানোর একটি টুল মাত্র। এআই আমাদেরকে ট্রেন্ড দেখাতে পারে, ডেটার ভিতরে লুকিয়ে থাকা স্টোরির সম্ভাবনা ধরতে পারে, এমনকি এমন প্যাটার্ন দেখাতে পারে যা আপনাদের চোখ এড়িয়ে যাবে। কিন্তু মাঠের বাস্তবতা বোঝা, মানুষের আবেগ পড়া এবং নৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়া এই দায়িত্ব সব সময় সাংবাদিকের।”
গেমপ্লিফাইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, “তথ্যের যুগ পেরিয়ে বিশ্ব এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে প্রবেশ করেছে। খুব শিগগিরই এমন সময় আসতে পারে, যখন এআই মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে ছাড়িয়ে যাবে—যাকে বলা হয় ‘সিঙ্গুলারিটি’। এই পরিবর্তন সাংবাদিকতার জন্য যেমন নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে, তেমনি নিয়ে আসছে নানামুখী চ্যালেঞ্জ ও ঝুঁকি।”
ডিআরইউয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাহমুদ সোহেল বলেন, “সাংবাদিকদের সব সময়ই তথ্য ও প্রযুক্তিতে এগিয়ে থাকতে হবে। এআই সম্পর্কে ধারণা না থাকলে ভবিষ্যতে সাংবাদিকতার মূলধারায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।”
প্রথম দিনের সেশনে প্রশিক্ষণ দেন ঢাকা পোস্টের হেড অব নিউ ইনিশিয়েটিভ আরিফুল ইসলাম আরমান ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস-এর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মালিহা তাবাসসুম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিআরইউয়ের সহ-সভাপতি মেহ্দী আজাদ মাসুম, যুগ্ম সম্পাদক মো. জাফর ইকবাল, সাংগঠনিক সগম্পাদক এম এম জসিম, দপ্তর সম্পাদক রাশিম মোল্লা, আপ্যায়ন সম্পাদক আমিনুল হক ভূঁইয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য আল-আমিন আজাদ, সুমন চৌধুরী ও মো. মাজাহারুল ইসলাম।