জাতীয়

ব্যয় বাড়ছে ঢাকা-চট্রগ্রাম ৪ লেন প্রকল্পের

বিশেষ প্রতিবেদক : ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের ব্যয় ক্রমেই বাড়ছে। দরপত্রের অতিরিক্ত কাজ হওয়ায় ব্যয় যেমন বাড়ছে; একইভাবে কোন কোন ক্ষেত্রে কাজ কমে যাওয়ায় তা কমছে বলেও  জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে কমার চেয়ে বাড়ার অংক অনেক বেশি।

 

প্রকল্পের ছয়টি প্যাকেজের মধ্যে চারটির ব্যয় বেড়েছে ১৫১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। অন্যদিকে, দুটি প্যাকেজে তা কমেছে মাত্র ১০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।

 

বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এসব প্রস্তাবসহ মোট ১২টি ক্রয়প্রস্তাবে  অনুমোদন দেওয়া হয়।

 

বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইঞা, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে অনুমোদিত বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান।

 

তিনি বলেন, ‘বৈঠকে বাস্তবায়নাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের আওতায় ছয়টি প্যাকেজের ভেরিয়েশন প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর চারটি প্যাকেজে নির্মাণ ব্যয় মোট ১৫১ কোটি ৮১ লাখ টাকা বাড়ছে ও দুটিতে  মোট ১০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা কমছে।’

 

প্যাকেজগুলো হচ্ছে- দাউদকান্দি টোলপ্লাজা থেকে কুটুম্বপুর পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার সড়ক, কুটুম্বপুর থেকে কুমিল্লা বাইপাসের শুরু পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার সড়ক,  কুমিল্লা বাইপাসের শেষ থেকে বাতিশা বাজার পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়ক, মিরসরাই বাজার থেকে পঞ্চশিলা বাজার পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার সড়ক ও পঞ্চশিলা বাজার থেকে কুমিল্লা বাইপাসের শেষ পর্যন্ত ১৭ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার সড়ক।

 

এ ছাড়া  প্যাকেজ ১০-এর আওতায় কুমিল্লা বাইপাসের শেষ প্রান্ত থেকে চট্টগ্রাম সিটি গেইট পর্যন্ত ১৫ দশমিক ২৯ কিলোমিটার সড়ক।

 

মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘রাজধানীর উত্তরায় স্বল্প ও মধ্যম আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য ৬৭২টি ফ্ল্যাট নির্মাণের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ঢাকার উত্তরার ১৮ নম্বর সেক্টরে ‘স্বল্প ও মধ্যম আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য এপার্টমেন্ট নির্মাণ’ প্রকল্পের প্যাকেজ-ডি-এর আওতায় একটি বেসমেন্টসহ ১৬তলা বিশিষ্ট ৮টি ভবন নির্মাণের প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এক হাজার ২৫০ ফুট আয়তনের ‘এ’ টাইপের এই ৮টি ভবনে মোট ফ্ল্যাট সংখ্যা হচ্ছে ৬৭২টি।’

 

তিনি জানান, তিনটি গ্রুপে ভবনগুলো নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে চারটি ভবন যৌথভাবে নির্মাণ করবে এআরকে-এমবিপি। এ চারটিতে মোট ফ্ল্যাট সংখ্যা ৩৩৬টি। এতে মোট ব্যয় হবে ১৭০ কোটি ৮ লাখ টাকা।

 

এ প্রকল্পের দুটি ভবন নির্মাণ করবে নাভানা কনস্ট্রাকশন। এর ফ্ল্যাট সংখ্যা ১৮০টি। এতে মোট ব্যয় হবে ৭৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

 

আর অবশিষ্ট দুটি ভবনও নির্মাণ করবে এআরকে-এমবিপি। এ দুই ভবনে মোট ফ্ল্যাট সংখ্যা থাকছে  ১৮০টি। এতে মোট ব্যয় হবে ৭৯ কোটি ৪ লাখ টাকা।

 

অতিরিক্ত সচিব জানান, ‘ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে চালাকচর পর্যন্ত নতুন রেল লাইন নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের নির্মাণ কাজের ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যৌথভাবে এ কাজটি পেয়েছে পিবিএএল-এসি। এতে ব্যয় হবে ১৫৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

 

বৈঠকে রাজধানীর তেজগাঁও-এ রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে বিভাগের প্রধান কার্যালয় নির্মাণের প্রস্তাবেও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি নির্মাণে ঠিকাদার  হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে যৌথভাবে প্রতিভা কনস্ট্রাকশন ও নাভানা কনস্ট্রাকশন। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

 

তিনি জানান, ‘পূর্বাচল নতুন শহর’ প্রকল্পের বিভিন্ন সেক্টরে সারফেস ড্রেনসহ অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণ কাজেরও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। এতে ব্যয় হবে ১৫ কোটি ৪ লাখ টাকা।

 

এ ছাড়া উত্তরা আদর্শ আবাসিক শহর (তৃতীয় পর্ব) প্রকল্পের অবশিষ্ট নির্মাণ কাজ, চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ইয়ার্ড রিমডেলিং-এর জন্য চুক্তিপত্রভূক্ত কাজের ভেরিয়েশন প্রস্তাবেও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বৈঠকে।

 

এর আগে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বলে জানান অতিরিক্ত সচিব। এ  বৈঠকে তিনটি প্রস্তাবে  নীতিগতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়।

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ মে ২০১৫/হাসনাত/সুমন