জাতীয়

প্রেম আসে, প্রেম যায় || পূরবী বসু

                 

তখন এমন একটা সময়, যখন আমার সান্নিধ্যই ছিলতোমার জীবনে সবচেয়ে বড় চাওয়া।নিবিড় আকাঙ্ক্ষা, আমার পাশে, আরো কাছে সরে আসা,হাতে হাত রেখে নদীপাড়ে ঘেঁষাঘেঁষি বসা।চুলের মৃদু সুগন্ধ, হাতের উষ্ণ স্পর্শ,নিশ্বাসের ঘন নৈঃশব্দ আমূল টের পাওয়া।চৈত্রের দুপুরে, বর্ষার রাতে, শারদ প্রভাতেকিংবা মাঘের বিকালে তুমি আসতে আমার প্রাঙ্গণে। গুটি গুটি পায়ে এসে দাঁড়াতে সামনে; আমার সর্বাঙ্গ ভরিয়ে দিতে মুগ্ধ দৃষ্টি, উষ্ণ চুম্বন আর গাঢ় আলিঙ্গন।     সেই পরিচিত, ব্যবহৃত, পুরোনো শরীর নিয়ে আমি আজও বেঁচে আছি।থেঁতলানো নিষ্প্রাণ পতঙ্গের মতো, এক খণ্ড পাথর কিংবা বরফের মতো, সদ্য কাটা কলাগাছের কাণ্ডের মতো। শীতল। পড়ে থাকি বিছানার একপাশে। সারা রাত। নিশ্চল। নিশ্চুপ।যেন ভয়ানক কোনো ছোঁয়াচে অসুখ।প্রশস্ত জাজিমের ’পর বিছানো ধু ধু সাদা চাদর শায়িত দুজনের মাঝে বাঞ্ছিত ফারাক জোগাতে অক্ষম।তুমি সরে যাও দূরে, আরো দূরে, খাটের অপর প্রান্তে; পুড়ে ছাই হয় আশ্লেষ; ভেসে যায় সকল ইচ্ছা-আবেশ-সুখ।ফুলদানির রক্ত-গোলাপ-ভালোবাসা আপনি ঢলে পড়ে, ঝরে পড়ে, মরে অতি সহজে, বিনা সমারোহে; এ কথা কে না জানে?তলানিতে সামান্য মায়া, নাকি দয়া, তবু কিছুকাল পড়ে থাকে,ঝুলে থাকে সংসার-ঝুলনে, অবুঝ শিশু কিংবা অর্থের টানাটানিতে।তারপর একদিন শুকনো পাতার মতো, সাপের খোলসের মতোখসে পড়ে অবশিষ্ট সকল বাকল;  ভেঙে পড়ে সৈকতের বালিঘর।একত্রে-গেঁথে-রাখা দুর্বল আঠা গলে গেলে পরাজিত, বিচ্ছিন্ন  মানুষ দুটির অস্তিত্ব বিপন্ন, চারপাশের নিষ্ঠুর কানাকানিতে।রাইজিংবিডি/ঢাকা/১১ জুলাই ২০১৫/তাপস রায়/কমল কর্মকার