জাতীয়

পৃতান আখ্যান

                 

|| কামরুস সালাম সংসদ ||আদি হতে আজ অবধি পৃথিবীর সন্তান তুমিজন্ম নিয়েছো প্রতিনিয়ত মানবশিশু রূপেই,অথচমানুষের পরিচয় কখনো জোটে নি তোমার।পুরাণের নীলকণ্ঠশ্বর যেমন শুষে নেয় বিষতুমি গায়ে মাখো সমাজের বিষাক্ত পুঁজ,আজন্ম বিষাদে। যত নামেই ডাকি তোমায় সব খানেই অবজ্ঞা অস্তিত্বের।এ সমাজ ততবার হয়ে ওঠে কুলাঙ্গার পিতার মতআপন অন্যায় মুছে দেওয়ার চেষ্টায়যে অস্বীকার করে যায় আপন সন্তান!তবুও ধরনীমাতা এতটুকু দ্বিধাগ্রস্থ নয় তোমার প্রসবে।চেতনার বীর্যধারীদের মুখে তুমি শোভা পাও কাকের ন্যায়যার অস্তিত্ব অস্বীকার করা যায় না লোক দেখানো পাখিপ্রেমিক হিসেবেঅথচ উচ্ছিষ্ট ব্যতীত অন্য কিছুই তোমার জন্য সুপারিশযোগ্য নয়। লিঙ্গ পরিচয়ে তুমি অন্যের দ্বারস্থ অস্তিত্বের অপরাধেশব্দরাজিতে তোমার খোঁজ মেলে বঞ্চনা আর অচ্ছুৎ ভ্রুকুটিতেহিজড়া অকুয়া জেনানা অথবা বৃহন্নলাপরিচয় পর্ব শেষে অপমানিত শব্দরা স্তব্ধ হয়ে যায় সৃষ্টির বেদনায়।তোমার জন্য রাষ্ট্র অথবা সংঘদর্শন অর্থনীতি সমাজনীতি ও বিজ্ঞানঅথবা সাধের সংস্কৃতি আর স্বপ্নের সাম্যবাদকোথাও দেখি না এতটুকু ভিন্ন ইতিহাসের আখ্যান!সর্বত্রই একক ও অপরিবর্তনীয় তুমি মিথ্যা ঈশ্বরের মতন। পুঁজির মালিকের চেয়ে যে বেশ্যার দালাল উত্তমসে তো জেনেছি বহুকাল আগেই,অথচউদ্বৃত্ত শ্রমের মূল্য নিয়ে নিত্য হাহাকার যে ঘরেসেখানেও কী ভীষণ নীরবতা তোমাকে নিয়ে।অস্পৃশ্য তোমার কোথাও আছে কী শ্রমের অধিকার? অথর্ব আমি এইসব দেখে চিনি সীমাবদ্ধতার সূত্রবুঝি,দ্রোহে আর বিপ্লবের তুমিও অংশীদার।একদিন তুমিও জেগে উঠবে ফুজিয়ামার মত,পাবে অংশীদারিত্বসম্মানের শিল্প-সাহিত্য-সমাজচেতনায়,নিশ্চিত একদিন;আপাততমুছে যাক গ্লানির পরিচয়,সীমারেখা টানা শত শব্দময় অভিধানপৃথিবীর সন্তান তুমি,তাই নাম দিলাম ‘পৃতান’।মূলত কবি। গীতিধর্মী কবিতার পাশাপাশি প্রবন্ধ লিখেন এবং প্রকাশনা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। জন্ম ও বেড়ে ওঠা পুরান ঢাকার গোপীবাগে।রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫/তাপস রায়