জাতীয়

কৌশলে লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার অভিযোগ

নাসির উদ্দিন চৌধুরী : প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে বুধবার রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ছিল ঘরমুখো মানুষের উপচে পড়া ভিড়। আর যাত্রী চাপের সুযোগ নিয়ে কৌশলে লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী উঠানো হচ্ছে। আর এর সঙ্গে লঞ্চ কর্মচারী ও তাদের দালালরা জড়িত বলে অভিযোগ করছেন যাত্রীরা।যাত্রীরা অভিযোগ করেন, দালালরা যাত্রীদের টার্মিনাল থেকে এক প্রকার জোর করে টেনে লঞ্চে উঠানোর চেষ্টা করছে। যে দালাল যত যাত্রী লঞ্চে তুলতে পারে, লঞ্চ কতৃপক্ষ তার উপর কমিশন দিয়ে থাকে। কেউ পায় এক’শ, কেউ বা আবার দু’শ।সদরঘাটের দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদসরা এর বিরুদ্ধে বার বার ব্যবস্থা নিলেও তা বন্ধ করতে পারছে না। সরেজমিন দেখা গেছে, ঘাটে অনেক লঞ্চ থাকলেও তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরার জন্য মানুষ নিয়মশৃঙ্খলার তোয়াক্কা না করে লঞ্চে উঠছে। অন্যদিকে বিআইডব্লিউটিএর ঘোষণা কেন্দ্র থেকে বার বার সতর্ক করার পরও কেউই তার তোয়াক্কা করছে না।এছাড়া কিছু লঞ্চ ঘাট ছেড়ে কিছুদূর যাওয়ার পর নৌকা থেকে অতিরিক্ত যাত্রী তুলেছে। এ জন্য লঞ্চগুলো মাঝ নদীতে গিয়ে নৌকা থেকে যাত্রী উঠানোর জন্য কিছুক্ষণ অপেক্ষা করছে। ফলে নদীতে সাময়িক নৌজটের সৃষ্টি হচ্ছে।ঢাকা থেকে চাঁদপুরগামী লঞ্চগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী নিতে দেখা গেছে। এছাড়াও বরিশাল, ঝালকাঠি, পটুয়াখালীর লোকাল লঞ্চগুলোতে যাত্রী বোঝাই রয়েছে। তবে বরিশালের দ্বীপরাজ, সুন্দরবন, পারাবত, সুরভী এ লঞ্চগুলোতে আগে থেকেই কেবিনের টিকিট বিক্রি করায় তেমন অনিয়ম চোখে পড়েনি। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ লঞ্চগুলোর ৮০ শতাংশ টিকিটই প্রভাবশালীরা প্রথম দিকেই বুকিং করে নিয়েছে এবং ডেকে অতিরিক্ত যাত্রী উঠানো হচ্ছে।বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সহকারী পরিচালক (মেরিন সেফটি) শামসুল আরেফিন বলেন, বুধবার সকাল থেকে এ পর্যন্ত ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৩৫টির বেশি লঞ্চ টার্মিনাল ছেড়েছে। এছাড়া রাত ১২টা পর্যন্ত আরও ৬৫ থেকে ৭০টি লঞ্চ ঘাট ছাড়বে।নাম প্রকাশ না করে বিআইডব্লিউটিএ’র এক কর্মচারী জানান, কোন লঞ্চ যাত্রীবোঝাই হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিদর্শককেন্দ্র থেকে সংশ্লিষ্ট লঞ্চটিকে ঘাট ছাড়ার জন্য বলা হলেও লঞ্চ মাস্টাররা ইচ্ছাকৃতভাবে দেরি করছে। বিআইডব্লিউটিএ সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার পরও লঞ্চের কর্মচারীরা লঞ্চে থাকা আনসারদের হাত করে অতিরিক্ত যাত্রী নিচ্ছে।এদিকে সুরভী-৯ লঞ্চের দায়িত্বে থাকা শফিক বলেন, লঞ্চগুলো যাত্রী পূর্ণ হওয়ার আগেই বিআইডব্লিউটিএ ঘাট ত্যাগ করার জন্য তাড়া দেয়। এ কারণে যে লঞ্চ সাড়ে ছায়টা বা সাতটায় ছাড়ার কথা সেটিকে সাড়ে চারটার দিকেই ঘাট ছেড়ে যেতে হচ্ছে। ফলে মালিকদের লোকসানে পড়তে হচ্ছে।লঞ্চগুলোতে যাত্রীবোঝাই দেখা যাচ্ছে- এ কথা জানানো হলে তিনি বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করা হচ্ছে না। ধারন ক্ষমতা যতটুকু সেই পরিমাণ যাত্রীই লঞ্চে নেয়া হচ্ছে।

     

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫/উজ্জল