জাতীয়

২০২৪ সালের আগে স্বল্পোন্নত থেকে বের হওয়া সম্ভব না

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বের হওয়া সম্ভব না বলে জানিয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্। তিনি বলেন, এই সময়ের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় যেতে যে তিনটি ক্যাটাগরি পূরণ করতে হয়, তা পূরণ করা অসম্ভব।

 

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর সিরডাপ অডিটোরিয়ামে আনকাটের ‘দ্য লিস্ট ডেভেলপমেন্ট কান্ট্রিস রিপোর্ট-২০১৫’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

 

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা তিনটি ক্যাটাগরি তথা মাথা পিচু আয়, মানব সূচক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি পূরণ করতে হবে। এই তিনটির মধ্যে বাংলাদেশ শুধু অর্থনৈতিক ঝুঁকির ক্যাটাগরি পার করেছে। বাকি মাথা পিচু আয়ের দিক থেকে স্বল্পন্নত ৪৮ দেশের মধ্যে নিচের দিক থেকে দিত্বীয়। আর মানব সূচক উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটু কাছাকাছি তথা ৬৬ শতাংশের জায়গায় ৬৩.৮ শতাংশ অর্জন করেছে।

 

তিনি আরো যোগ করেন, এই তিন ক্যাটাগরির মধ্যে দুইটি ক্যাটাগরি পূরণ করতে পারলে সেই দেশকে তিন বছর পর্যালোচনার মধ্যে রাখা হবে। আর সেই দেশ সেই অবস্থানে থাকলে এবং বাকি একটি ক্যাটাগরি পূরণ করতে পারলে তাকে স্বল্পন্নত দেশের তালিকা থেকে বের করে দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী বলা যায়, ২০২৪ সালের মধ্যে এই তালিকা থেকে বের হওয়া অসম্ভব।

 

ড. দেবপ্রিয় এই তালিকা থেকে বের হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, প্রথমে সরকারকে উত্তরণ পূর্ব ও উত্তরণ উত্তর পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। কেননা গৎবাঁধা পরিকল্পনা নিয়ে এগোলে এই তালিকা থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় প্রবেশ করা যাবে না। এজন্য প্রথমে মানবসম্পদ উন্নয়নে গুরুত্ব দিতে হবে। এই মানবসম্পদ উন্নয়নে জোর দিলে আরো দুটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় জোর দেওয়া সম্ভব হবে। তাহলো কৃষি ব্যবস্থা এবং গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন সম্ভব হবে।

 

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ কৃষি ভূমি উৎপাদনে এক নম্বরে, কিন্তু শ্রমের উৎেপাদনশীলতায় সবার থেকে পিছিয়ে। শ্রমের উৎপাদনশীলতার দিক থেকে স্বল্পন্নত দেশগুলোর মধ্যে আমরা ৪৮তম। তাই কোনো দেশ কৃষি উৎপাদনে উন্নয়ন ছাড়া উন্নত দেশে পরিণত হতে পারে না। সেই দিক থেকে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে।

 

মধ্যম আয়ের দেশই সব কিছু নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এইসব ক্যাটাগরি করা হয় শুধু আয়ের দিক থেকে। কিন্তু স্বল্পন্নত দেশ ও উন্নয়নশীল দেশের তালিকা হয় ওই তিনটি ক্যাটাগরির উত্তরণের মাধ্যমে। মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে অনেক উন্নত দেশ আছে যারা এখনো স্বল্পন্নত দেশের তালিকার মধ্যে। তাই আমাদের মাথাপিছু আয়ের চিন্তা বাদ দিয়ে সামষ্টিগত উন্নয়নের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

 

এই সংবাদ সম্মেলনে গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান, পরিচালক আনিসাতুল ফাতেমা ইউসুফ, পরিচালক ফাহমিদা খাতুন এবং অতিরিক্ত গবেষনা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রমুখ।

     

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ নভেম্বর ২০১৫/মামুন/দিলারা