নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা সিটি করপোরেশনে বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পৌরকর মওকুফ করার আশ্বাস দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র সাঈদ খোকন ও ঢাকা উত্তর সিটি মেয়র আনিসুল হক।বিজয় দিবস উপলক্ষে বুধবার বেলা ১১টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে দুই সিটি করপোরেশন আয়োজিত ‘ঢাকা সিটির বসবাসরত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধারা পৌরকর মওকুফের দাবি জানালে তা বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন দুই মেয়র।বেলা ১১টার দিকে ঢাকা সিটির মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় পতাকা ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন দুই সিটি মেয়র সাঈদ খোকন ও আনিসুল হক। অনুষ্ঠানে ঢাকা সিটির হাজারো মুক্তিযোদ্ধাকে ফুলেল সংবর্ধনা দেওয়া হয়।ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মো. বিলালের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ঢাকা সিটিতে বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কাউন্সিলর আবু আহমেদ মান্না, ঢাকা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিটের সভাপতি আমীর হোসেন মোল্লা প্রমুখ।মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ‘দেশের জন্য জান বাজি রেখে যুদ্ধ করেছি। চোখের সামনে হারিয়েছি স্বজনদের। তারপরও পাক হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে ছিনিয়ে এনেছি স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য। এখন আর আমাদের চাওয়া-পাওয়ার কিছু নাই। আমরা চাই, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে একটু সম্মান। যদি পৌরকর মওকুফ করা যায়, সেটি করা। আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে ঢাকা সিটির সড়কের নামকরণ ও এমন কিছু করা, যাতে পরবর্তী প্রজন্ম অন্তত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ রাখবে।’মুক্তিযোদ্ধাদের বক্তব্যের জবাবে ঢাকা দক্ষিণের সিটি মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ‘আপনারা দেশ ও জাতির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান। জীবন বাজি রেখে, জীবন দিয়ে আপনারা আমাদের লাল সবুজের পতাকা উপহার দিয়েছেন। গায়ের চামড়া দিয়ে জুতা বানালেও আমরা কোনো দিন এর বিনিময় দিতে পারব না। আপনাদের যে অর্জন, তা কোনো দিন কোনো কিছুর সঙ্গে তুলনা করার নয়। দেশ ও জাতি আপনাদের সেই সংগ্রাম, ত্যাগ ও জীবনদানের মহৎকীর্তি আজীবন স্মরণ রাখবে।’তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি প্রসঙ্গে বলেন, ‘আপনারা এই জাতিকে যা দিয়েছেন, তার বিপরীতে যা চাচ্ছেন, তা কোনো চাওয়া নয়। পৌরকর মওকুফসহ আপনাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে।’ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হকও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের কথা স্মরণ করে তাদের দাবিদাওয়া পূরণে একটি সম্মিলিত কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন।অনুষ্ঠানে দুই সিটি মেয়র দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবনদানকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। অনুষ্ঠান শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে আয়োজন করা হয় ভূরিভোজের।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ ডিসেম্বর ২০১৫/নঈমুদ্দীন/সাইফুল/এএন