জাতীয়

সাগরচুরি-ফটকাবাজি বন্ধে সংসদে অর্থমন্ত্রীর ব্যাখ্যা দাবি

সংসদ প্রতিবেদক : আর্থিক খাতে কীভাবে সাগরচুরি ও ফটকাবাজি বন্ধ হবে, সে ব্যাপারে সংসদে অর্থমন্ত্রীর ব্যাখ্যা দাবি করেছেন বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

 

সোমবার জাতীয় সংসদের একাদশতম অধিবেশনে বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।

 

তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেট বিশাল ঘাটতির বাজেট। এই বিশাল ঘাটতির বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। কারণ, সীমিত সম্পদের এ দেশে সরকারকে ঘাটতি মেটাতে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। এই বিশাল ঘাটতির বাজেট কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, সে বিষয়ে অর্থমন্ত্রী কিন্তু তার বাজেট বক্তব্যে কোনো নির্দেশনা দেননি। আমাদের অর্থমন্ত্রী চিরকাল স্বপ্নবিলাসী লোক। তিনি নিজেও এটা স্বীকার করেছেন।’

 

বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ বলেন, ‘আমরা ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেখছি, যে টাকা দরকার হবে তার ৬০ শতাংশ যোগান দেবে এনবিআর। রাজস্বের ক্ষেত্রে যদি এমন হয়, তাহলে কীভাবে আমরা এই টাকা যোগান দিতে পারব?’

 

স্বাস্থ্য খাতে প্রয়োজনের তুলনায় কম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, এ অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এই স্বল্প বরাদ্দে স্বাস্থ্য খাতে স্বাস্থ্যের কোনো উন্নতি হবে না। বরং স্বাস্থ্য আরো অবনতির দিকে যাবে। তাই আমরা স্বাস্থ্য খাতে আরো বেশি বরাদ্দের জন্য আবেদন জানাচ্ছি।’ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোয় অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

 

অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে বিনিয়োগের জন্য কোনো সুখবর নেই। এমনকি বিনিয়োগ কীভাবে বাড়বে, সে ধরনের কোনো পদক্ষেপও নেই।’ 

 

তিনি আরো বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তব্যে শেয়ার মার্কেটকে ফটকাবাজি বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ফটকবাজির অবসান হলে শেয়ারবাজার চাঙ্গা হবে। কিন্তু কীভাবে শেয়ারবাজারের ফটকাবাজির অবসান ঘটবে, সেটা কিন্তু সুষ্পষ্টভাবে বলেননি। যদি এটার অবসান ঘটাতে হয়, তাহলে সরকারকেই এর দায়িত্ব নিতে হবে। কারণ, লুটপাটের ব্যাপারে আমরা দেখেছি, তদন্ত কমিটি হয়। কমিটি রিপোর্ট পেশ করে। কিন্তু সেই লুটপাটের কোনো বিচার হয় না। ব্যাংকিং খাতে যে অনিয়ম হয়েছে, তা কীভাবে নিরসন হবে, তার দিকনির্দেশনা নেই। আর অর্থমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, সাগরচুরির কথা। কিন্তু কীভাবে সাগরচুরি বন্ধ হবে, ফটকাবাজি বন্ধ হবে, এ কথা অবশ্যই অর্থমন্ত্রীকে এই সংসদে বলতে হবে।’

 

তাজুল ইসলাম চৌধুরী অভিযোগ করেন, ‘বিদেশে টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে, তা বন্ধেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেননি অর্থমন্ত্রী। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকে যে ঘটনা ঘটে গেল, এটার কি কোনো সুষ্ঠ বিচার হবে না? আমরা কি আমাদের টাকা ফেরত পাব না? টাকা কীভাবে ফেরত আনব, তারও কোনো দিকনির্দেশনা এই বাজেট বক্তব্যে দেওয়া হয়নি।’

     

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ জুন ২০১৬/এনআর/রফিক