জাতীয়

‘নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে না পারা রাজনীতিকদের দেউলিয়াপনা’

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, একটা গণতান্ত্রিক সরকার দেশে পাঁচ বছর শাসন করতে পারবে, অথচ স্বাধীনভাবে, নিরপেক্ষভাবে কোনো নির্বাচন দিতে পারবে না, এটা রাজনীতিবিদদের জন্য দেউলিয়াপনা।

 

শনিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

 

প্রধান বিচারপতি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা  বিষয়ে বলেন, ‘একটি বিশেষ মহলের প্ররোচনায় গণতান্ত্রিক সরকারের পরিবর্তে অগণতান্ত্রিক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনার লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধন করে বিচার বিভাগকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে সাবেক প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালনের কারণে তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এ কথা অনস্বীকার্য, গণতন্ত্রকে বিকশিত করার জন্য গণতান্ত্রিক সরকারের প্রয়োজন। গণতান্ত্রিক সরকারের স্থলে অগণতান্ত্রিক সরকার সমাধান নয়। এটি রাজনীতিবিদদের দেউলিয়াপনা।

 

তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা সংবিধান থেকে বাতিল করা প্রসঙ্গে বিচারপতি এস কে সিনহা বলেন, ‘ত্রয়োদশ সংশোধনীর ফলে অগণতান্ত্রিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচনকে একটি মহলের খেয়াল-খুশি মতো পরিচালনার ব্যবস্থা হয়েছিল। ত্রয়োদশ সংশোধনী আইন রাষ্ট্রের মূলভিত্তি জনগণের সার্বভৌমত্ব, রাষ্ট্রের প্রজাতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক পরিচয় খর্ব করায় দেশের সর্বোচ্চ আদালত তা অসাংবিধানিক ও অবৈধ বলে ঘোষণা করে। ওই সংশোধনী বাতিল করে গণতান্ত্রিক কাঠামো শক্তিশালী করতে নির্দেশ প্রদান করে বিচার বিভাগ।

 

তিনি বলেন, সরকার নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে পারে কিনা এটা দেখার দায়িত্ব রাজনীতিবিদদের। বিচার বিভাগের দায়িত্ব নয়।

 

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখিয়েছে বিচার বিভাগ- এ মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্তরায় দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদ ও চোরাচালান। দুর্নীতি দেশের উন্নয়নের প্রায় ৪০ শতাংশ ধ্বংস করে। এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধকতা কেবল বিচার বিভাগই তৈরি করে।

 

দেশের গত ২/৩ বছরে যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তার পেছনে বিচার বিভাগের অবদান অনস্বীকার্য। সুপ্রিম কোর্ট দুর্নীতির মামলা থেকে শুরু করে, স্বর্ণ চোরাচালান- সব ধরনের মামলায় কোনোরকম ছাড় দেয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

 

আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আব্দুল ওয়াহাব মিঞার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি মাহমুদুল আমীন চৌধুরী, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলু, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ ডিসেম্বর ২০১৬/মেহেদী/মুশফিক