জাতীয়

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মহাপরিকল্পনা স্ববিরোধী : আনু মুহাম্মদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সরকারের করা মহাপরিকল্পনা ভুলে ভরা এবং স্ববিরোধী, এ কথা উল্লেখ করে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন তেল-গ্যাস-খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। দেশের স্বার্থে বিশেষজ্ঞসহ সব পর্যায়ের মানুষের সম্মতি নিয়ে আগামী ১৮ মার্চ একটা মহাপরিকল্পনা ঘোষণা এবং এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে একটি মহাসমাবেশের করার কথা জানিয়েছেন তিনি। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণঅবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এ ঘোষণা দেন। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ও সুন্দরবনবিনাশী সব অপতৎপরতা বন্ধসহ সাত দফা দাবি বাস্তবায়নে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিয়ে সরকারের করা মহাপরিকল্পনা ভুলে ভরা ও স্ববিরোধী। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের নামে বাংলাদেশের সম্পদ দেশি-বিদেশি লুটেরাদের হাতে তুলে দেওয়ার নকশা তৈরি করেছে সরকার।’ তিনি বলেন, ‘জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশের জনস্বার্থকে সামনে রেখে ও পরিবেশকে সমুন্নত রেখে সুলভ ও টেকসই সমাধানের মহাপরিকল্পনা দেশের মানুষের সামনে প্রকাশ করা হবে। বিদেশ থেকে ঋণ না নিয়ে, দেশের পরিবেশ নষ্ট না করে, বিদেশিদের আধিপত্য না দিয়ে টেকসই সমাধান করা সম্ভব। কোনোরকম ক্ষতি না করে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব, অনেক কম দামে গ্যাস দেওয়া সম্ভব, সেটাই আমরা মহাপরিকল্পনায় সবার সামনে উপস্থাপন করব। উপকূলীয় অঞ্চলে যত বাধা থাকুক, ভয়ভীতি থাকুক না কেন, তা জয় করে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে মহাসমাবেশ করা হবে। আমরা জানি, কীভাবে কম পয়সায় জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খ্যাতের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।’ তিনি আরো বলেন, ‘সচিবালয় ও মন্ত্রণালয় লুটেরাদের দখলে চলে গেছে। এজন্য তারা সুন্দরবনের গুরুত্ব বুঝতে পারছে না। তাই বিদেশিদের সাথে তাল মিলিয়ে দেশের স্বার্থ নষ্ট করে লুটপাটে ব্যস্ত রয়েছে। সুন্দরবন ধ্বংস করার জন্য শুধু ভারতের কোম্পানির কাছে দেশের সম্পদ জমা দেওয়ার পাঁয়তারা নয়, নিজেদের ব্যাংক ব্যালেন্স করার জন্য ও সুন্দরবন ধ্বংস করার জন্য বিদেশি কোম্পানির পক্ষে মিডিয়াতে বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। তারা সুন্দরবন ধ্বংসের বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। তাই গত ছয় মাসে আমাদের যতগুলো কর্মসূচি হয়েছে সেখানে পুলিশি নির্যাতন চালানো হয়েছে। সেই হামলা ও নির্যাতন ঢাকায় যতটা হয়েছে, তার থেকে বেশি গত সাত বছরে খুলনা ও বাগেরহাটে করা হয়েছে।’ গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তথ্য প্রযুক্তি দিয়ে প্রমাণিত হলো গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। তবুও বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন নাটকীয়ভাবে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করেছে, যা যুক্তিসংগত নয়। গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে পরিবহনের ভাড়া বাড়বে। যারা গ্যাস ব্যবহার করেননি তাদেরকেও গ্যাসের দাম বাড়ার জন্য অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হবে। গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে বিদ্যুতের দাম বাড়বে। এর খেসারত দিতে হবে সবাইকে।’ গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী মঙ্গলবার সারা দেশে আধা বেলা হরতালে সংহতি প্রকাশ করে জাতীয় কমিটি। কমিটির আহ্ববায়ক শেখ মুহাম্মদ শহিদুল্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণঅবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন- বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা বহ্নিশিখা জিলানী, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক ফিরোজ আহমেদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশরেফা মিশু। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/সাওন/শাহনেওয়াজ/রফিক