জাতীয়

হজের প্রাক-নিবন্ধনে অনিয়ম হয়নি: তদন্ত কমিটি

সচিবালয় প্রতিবেদক : ২০১৭ সালের হজে প্রাক-নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি। এ নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয় জনস্বার্থে এ বিজ্ঞপ্তি জারি করে। এতে বলা হয়, হজ নিবন্ধন নিয়ে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি এ বিষয়ে কোনো প্রকার অনিয়ম খুঁজে পায়নি। তাই প্রাক-নিবন্ধনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই। এ নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই। ধর্ম মন্ত্রণালয় জানায়, চলতি বছরের হজ প্রাক-নিবন্ধনের একপর্যায়ে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) প্রাক-নিবন্ধন সিস্টেমে কারিগরি অনিয়মের অভিযোগ উত্থাপন করে। অভিযোগ আমলে নিয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটি গঠন করে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর একজন সিনিয়র অধ্যাপকসহ কারিগরি বিশেষজ্ঞদের কমিটিতে রাখা হয়। সূত্রমতে, তদন্ত কমিটি দীর্ঘদিন পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষে মন্ত্রণালয়কে রিপোর্ট জমা দেয়। তদন্তে হজ নিবন্ধনের সিস্টেমে কোনো কারিগরি ত্রুটি ও অনিয়মের সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। জানা যায়, হাবের অভিযোগ তদন্ত ছাড়াও প্রাক-নিবন্ধনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরে ৩২টি হজ এজেন্সি হাইকোর্টে রিট পিটিশন (৩০০৭/২০১৭) দায়ের করে। হাইকোর্টের শুনানি চলাকালে, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় পিটিশনের প্রতিটি বিষয় ও হজ এজেন্সিসমূহ এবং মাননীয় আদালতের উত্থাপিত প্রশ্নের জবাবে তাদের জবাব ও প্রমাণাদি হাইকোর্টে উপস্থাপন করে। শুনানিতে হজ এজেন্সির পক্ষ থেকে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করতে না পারায় শুনানি শেষে আদালত রিট পিটিশনটি খারিজ করে দেন। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দাবি, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও আদালতের রিট পিটিশন খারিজের আদেশে প্রমাণ হয়, ২০১৭ সালের হজে প্রাক-নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি। ফলে এ বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমান সরকারের ডিজিটাল হজ ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন, সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ ও সৌদি আরবের ই-হজ সিস্টেমের সঙ্গে সমন্বয় সাধনের লক্ষ্যে সরকার ২০১৬ সাল থেকে ইলেক্ট্রনিক সিস্টেমে হজের প্রাক-নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করে। একই ধারাবাহিকতায় ই-হজ সিস্টেমে ২০১৭ সালের হজের প্রাক-নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়। অনুমোদিত হজ এজেন্সিসমূহ, সারাদেশের ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রসমূহ, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জেলা ও কেন্দ্রীয় অফিসসমূহ, অনুমোদিত ব্যাংকসমূহ, পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চসহ ৭ হাজার অধিক ইউজার সরাসরি এই সিস্টেমে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছতার সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সূত্র আরো জানায়, হজ ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজড হওয়ার ফলে হজ সম্পর্কিত সব তথ্য সারাদেশে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে। ওয়েবসাইটে তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য হালনাগাদ বা কলসেন্টার সেবার মাধ্যমে তথ্য প্রদানের ফলে বিশেষ কোনো মহলের পক্ষে হজযাত্রীদের প্রতারণা করে অবৈধ ফায়দা গ্রহণের সুযোগ কমে যাচ্ছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে ই-হজ ব্যবস্থাপনার কারণে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমে গেছে। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে হজ নিয়ে প্রতারণাও। তিনি বলেন, ই-হজ ব্যবস্থাপনার কারণে কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিদিতা নিশ্চিত হয়েছে। কিন্তু তারপরও একটি স্বার্থান্বেষী চক্র বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়ে ই-হজ ব্যবস্থাপনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ এপ্রিল ২০১৭/নঈমুদ্দীন/মুশফিক