জাতীয়

সংসদে দ্রুত বিচার আইন সংশোধন বিল উত্থাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সংসদ থেকে : দেশে যেকোনো অরাজক পরিস্থিতি ঠেকাতে দ্রুত বিচার আইনের সংশোধনী উত্থাপিত হয়েছে সংসদে। ‘আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন ২০০২’ অধিকতর সংশোধন করে শাস্তির মেয়াদ বাড়াতে বিলটি আনা হয়েছে। বিলে বর্ণিত অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তির মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে সাত বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে সোমবার জাতীয় সংসদের দশম অধিবেশনে বিলটি উত্থাপিত হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বিলটি উত্থাপন করেন। ‘আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন) আইন ২০১৮’ শীর্ষক বিলে দুটি সংশোধনী আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। পরে এক সপ্তাহের মধ্যে পরীক্ষ-নিরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন উপস্থাপনের জন্য বিলটি সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতে প্রেরণ করা হয়। প্রস্তাবিত বিলের ২ ধারায়  বিদ্যমান আইনের ৪-এর উপধরা-১-এ বর্ণিত সর্বোচ্চ শাস্তির মেয়াদ ‘পাঁচ বৎসর’-এর পরিবর্তে ‘সাত বৎসর’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর আগে বিদ্যমান আইনে আছে, ‘কোনো ব্যক্তি কোনো আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ করিলে তিনি অন্যূন দুই বৎসর এবং অনধিক পাঁচ বৎসর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।’ এছাড়া প্রস্তাবিত বিলের ৩ ধারায় বিদ্যমান আইনের ৮-এর উপধারা-২-এ বর্ণিত শাস্তি প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের বিবরণ প্রতিস্থাপন করে বলা হয়েছে, ‘সরকার বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত একজন প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটকে উক্ত আদালতের বিচারক নিযুক্ত করিবে।’ এর আগে ছিল ‘আদালত সরকার কর্তৃক নিযুক্ত একজন প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়া গঠিত হইবে।’ বিদ্যমান আইনের ৮-এর (১) ধারা অর্থাৎ ‘সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে প্রত্যেক জেলায় এবং মেট্রোপলিটন এলাকায় এক বা একাধিক দ্রুত বিচার আদালত গঠন করিতে পারিবে এবং উক্ত প্রজ্ঞাপনে প্রত্যেকটি দ্রুত বিচার আদালতের স্থানীয় অধিক্ষেত্র নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবে।’ বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে দ্রুত কার্যকর ভূমিকা পালনের উদ্দেশ্যে চাঁদাবাজি, যানবাহন চলাকালে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, যানবাহনের ক্ষতিসাধন, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি নষ্ট কার, ছিনতাই, দস্যুতা, ত্রাস ও অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি, দরপত্র ক্রয়-বিক্রয় গ্রহণের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, ভয়-ভীতি প্রদর্শন ইত্যাদি বিভিন্ন গুরুতর অপরাধের দ্রুত বিচার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অধিকতর উন্নতির লক্ষ্যে ‘আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন ২০০২’ প্রণয়ন ও জারি করা হয়েছিল। উক্ত আইনের ধারা ৪-এর উপধারা-১-এ বিধৃত শাস্তির পরিমাণ কম থাকায় আইনটি সময়োপযোগীকরণ এবং দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও অধিকতর উন্নতির লক্ষ্যে এ বিধৃত শাস্তির পরিমাণ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ জানুয়ারি ২০১৮/আসাদ/মুশফিক