জাতীয়

মিরসরাইয়ে দেশের সর্ববৃহৎ ইপিজেড

ডেস্ক রিপোর্ট : সাড়ে চার বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রত্যাশা নিয়ে যাত্রা শুরু করল দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল- বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল। দেশের ল্যান্ডব্যাংক হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে এক হাজার ১৫০ একর জমিতে এ প্রকল্প গড়ে উঠবে। বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা) এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই প্রকল্প উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি স্থানীয় সাংসদ এবং গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে প্রকল্পের বিষয়ে কথা বলেন। গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন জানান, ‘মিরসরাই ইকোনমিক জোনের শুধু বেপজার ইপিজেড প্রকল্পে পাঁচ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে। আগামী দুই বছরের মধ্যে ইপিজেডের কার্যক্রম শুরু করতে পারব বলে আশা করছি।’ এখানে ৪৫০টি প্লটে ৩০০টি ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে মোশাররফ বলেন, ‘এই ইপিজেডে প্রায় সাড়ে চার মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।’ বেপজা সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে দেশে ইপিজেড রয়েছে মোট আটটি। এই আটটি ইপিজেডের মোট ভূমির পরিমাণ দুই হাজার ৩০৮ একর। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় চট্টগ্রাম ইপিজেড, এটির মোট ভূমি ৪৫৩ একর। সেই হিসেবে মিরসরাইয়ের ইপিজেডটি হবে বর্তমানের সবচেয়ে বড় ইপিজেডটিরও প্রায় তিনগুণ। এছাড়া বিনিয়োগের দিক থেকেও অনেক এগিয়ে থাকবে নতুন ইপিজেড। যেখানে আটটি ইপিজেডে মিলে এখন পর্যন্ত মোট বিনিয়োগ এসেছে চার দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার; সেখানে মিরসরাইয়ের নতুন ইপিজেডেই বিনিয়োগ প্রত্যাশা সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার। এদিকে উদ্বোধনের আগেই বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বাস্তবায়নাধীন এই ইপিজেড। বেপজা সূত্র জানায়, এই জোনে প্লট পেতে ইতোমধ্যে ৫০টির মতো আবেদন জমা পড়েছে। তবে তৈরি পোশাকের চেয়ে প্রযুক্তিনির্ভর এবং ভারী শিল্প এবং একইসঙ্গে বিনিয়োগকারী দেশ হিসেবে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। গত ছয় মাসেই ২০০টির মতো প্লটের চাহিদাপত্র জমা পড়েছে। আবেদনকারীদের মধ্যে লেদার ফ্যাক্টরি ও গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) মহাব্যবস্থাপক খোরশেদ আলম জানান, ‘এটি হবে বেপজার অধীনে সবচেয়ে বড় শিল্পজোন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর এখন মাটি ভরাট, সড়ক নির্মাণসহ অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ পুরোদমে শুরু হবে এবং দ্রুততার সঙ্গে শেষ করা হবে। এতদিন অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী শিল্প স্থাপনের জন্য ভূমি বরাদ্দ চাইলেও তা দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। মিরসরাইয়ে বিশাল জায়গা পাওয়ায় আমরা বিনিয়োগকারীদের ধরে রাখতে পারব। সবমিলে খুব শিগগিরই মিরসরাইতে একটি বড় শিল্পজোন দেখতে পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান। বেপজার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) নাজমা বিনতে আলমগীর জানান, ‘২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের চরশরৎ এলাকায় এক হাজার ১৫০ একর জমি বেপজা ইপিজেড করার অনুমতি দেন। এরপর থেকেই সেখানে রাস্তা ও সীমানা নির্ধারণ, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং পরিবেশ ছাড়পত্রের জন্য কনসালটেন্ট নিয়োগের দরপত্র আহ্বান করে বেপজা। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী দুই বছরের মধ্যে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে অবস্থিত বেপজা ইপিজেড পুরোপুরি বিনিয়োগ উপযোগী হয়ে উঠবে।’ তথ্যসূত্র : বাসস রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ জানুয়ারি ২০১৭/মুশফিক/এনএ