জাতীয়

লজ্জা থাকলে তারা আর লুটপাট করবে না

বরিশাল থেকে নৃপেন রায় ও জে খান স্বপন : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আদালতের রায়ের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, এতিমের টাকা মারা ইসলাম ধর্মও সমর্থন করে না। এতিমের সম্পদ মেরে খেলে তার শাস্তি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনও দেন। আর সেই শাস্তি আজকে খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া পেয়েছে। লজ্জা থাকলে জীবনে আর তারা লুটপাট করবে না। বৃহস্পতিবার বিকেলে বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে জনসভায় বিপুল পরিমাণ লোকসমাগম হয়। জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করার জন্য বরিশালবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতাও জ্ঞাপন করেন তিনি। হ্যাটট্রিক জয়ের মিশন নিয়ে নির্বাচনী প্রাক-প্রচারণার অংশ সিলেটের পর আজ বরিশালে জনসভায় অংশ নেন শেখ হাসিনা। বিএনপি–জামায়াত জোটের শাসনামলের দুঃশাসন তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তাদের কাজটাই ছিল মানুষের ওপর অত্যাচার আর দুর্নীতি করা। টাকা পাচার করা। তিনি আরো বলেন, আপনারা জানেন খালেদা জিয়ার ছেলে দুর্নীতি করে টাকা পাচার করেছে। আমাদের দোষ নয়। আমেরিকান ফেডারেল কোর্ড বলেছে, খালেদা জিয়ার ছেলে দুর্নীতিবাজ। দুর্নীতি করে মানি লন্ডারিং করেছে। টাকা পাচার করেছে। আরেক ছেলে ধরা পেড়েছে সিঙ্গাপুরে। সিঙ্গাপুরের কোর্ট পর্যন্ত সেই শান্তি দিয়েছে এবং বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম আমরা ওই পাচার করা টাকা ফেরত এনেছি। ক্ষমতায় থাকতে জনগণের সম্পদ লুটপাট করেছে। লুটপাট, দুর্নীতি, হত্যা ও ষড়যন্ত্র- এছাড়া তারা কিছুই জানে না বলেও সমালোচনা করেন তিনি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রতিহতের লক্ষ্যে অবরোধ-হরতালের নামে বিএনপির আগুন সন্ত্রাসের বীভৎসতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে কীভাবে অত্যাচার করেছে? পেট্রোল বোমা মেরে মানুষকে হত্যা করেছে, আগুনে পুড়িয়ে পুড়িয়ে। যার মধ্যে এতটুকু মনুষ্যত্ব আছে সে কখনো জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারতে পারে কিনা? আমরা তা জানি না। বিএনপির আগুনসন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে শেখ হাসিনা বলেন, তারা এতিমের টাকা পর্যন্ত চুরি করেছে। এতিমখানার জন্য টাকা এসেছে। সে টাকা এতিমের কাছে চলে যাবে কিন্তু সে টাকা খেয়ে ফেলেছে? আজকে ধরা পড়ে গেছে ওই এতিমের টাকা মেরে। কারণ এতিমের টাকা মারা এটা তো আমাদের ইসলাম ধর্মও সমর্থন করে না। এতিমের সম্পদ মেরে খেলে তার শাস্তি আল্লাহ আব্বুল আলামিনও দেন। আর সেই শাস্তি আজকে খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া পেয়েছে। লজ্জা থাকলে তারা জীবনে আর লুটপাট করবে না। দুর্নীতি করবে না। মানুষের অর্থসম্পদ নেবে না। কোর্ট রায় দিয়েছে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। কিন্তু অন্যায় করলে যে শাস্তি পায় সেটা আজকে প্রমাণিত হয়েছে- বলেন প্রধানমন্ত্রী। বৃস্পতিবার এই জনসভায় যোগ দিতে বেলা ১১টা থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আসতে শুরু করে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধু উদ্যানসহ জনসভাস্থলের আশপাশ লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। বরিশাল-৫ আসনের সংসদ সদস্য জেবুন্নেছা আফরোজের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে জনসভা শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩টা ২০ মিনিটে জনসভা মঞ্চে আসেন। জনসভার সভাপতিত্ব করেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ফুফাতো ভাই আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ এমপি। রাইজিংবিডি/বরিশাল/৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/নৃপেন/জে. খান স্বপন/মুশফিক